জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
অর্থ আত্মসাতের দায়ে এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইনস্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পদে শাহ জামাল হাওলাদারের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন খারিজ করে পুনরায় তাঁকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। নিয়মনীতি উপেক্ষা করে তিনি শত কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেছেন বলে আইডিআরএ সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, সিইও হিসেবে শাহ জামাল হাওলাদার গত তিন বছরে (২০২১, ২০২২ ও ২০২৩) বিমা গ্রাহকদের প্রিমিয়ামের ৮১ কোটি ৫২ লাখ টাকার অধিকাংশ অর্থই ব্যয় করেছেন। এতে লাইফ তহবিলে মাত্র ১ কোটি ২০ লাখ টাকা অবশিষ্ট রয়ে যায়। বিমার দাবি পরিশোধে কোম্পানির কোনো বিনিয়োগ নেই। এসবের নেপথ্যে ছিলেন সিইও শাহ জামাল হাওলাদার। পাশাপাশি তিনি বিমা কোম্পানির ব্যয়ের সীমা ৫ শতাংশ হারে ১ কোটি ২৭ লাখ টাকার বদলে সীমা লঙ্ঘন করে ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত ব্যয় দেখানো অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ কোটির বেশি। এ ছাড়া তিনি আইডিআরএর অনুমোদন না নিয়ে বিমা নতুন পণ্য বাজারে ছেড়ে লাইফ বিমাকারীর ব্যবস্থাপনা ব্যয় সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণী বিধিমালা অনুমোদিত সীমার অতিরিক্ত ২১ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ একটি বড় অপরাধ। এমন সিইও পুনরায় নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ নেই। এ জন্য গ্রাহক এবং কোম্পানির স্বার্থে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, গত ৮ মে এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইনস্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পদে শাহ জামাল হাওলাদারের মেয়াদ শেষ হয়। নিয়োগ নবায়নের আবেদন করলেও ১০ জুন তা নামঞ্জুরের সিদ্ধান্ত নেয় আইডিআরএ কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে অভিজ্ঞতার বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে এনআরবি ইসলামিক লাইফের মুখ্য নির্বাহী পদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। নিয়োগ অনুমোদনের শর্ত ভঙ্গ করে তিনি প্রায় দ্বিগুণ বেতন-ভাতা নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে শাহ জামাল হাওলাদারকে একাধিকবার ফোন এবং খুদে বার্তা পাঠালেও তাঁর সাড়া মেলেনি।