রেজাউল করিমের বাড়ি নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার বিলকৃষ্ণপুরে। দেনার দায়ে আটকে গিয়ে তিনি প্রায় দুই বছর আগে গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানার ঝিনুক মার্কেট এলাকায় গিয়ে রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করেন। কিন্তু বেশি টাকা আয়ের আশায় পরে যোগ দেন ডাকাত দলের সঙ্গে। ইতিমধ্যে পাঁচ থেকে ছয়টি ডাকাতিতে অংশও নিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত দুই সঙ্গীসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি।
রংপুরের পীরগঞ্জে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে বাস ডাকাতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে রেজাউল করিমসহ (৩২) তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টার দিকে উপজেলার চতরা ইউনিয়নের কাটাদুয়ার হলদিবাড়ীতে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
অভিযুক্ত বাকি দুজন হলেন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বেরাডাংগা গ্রামের খোরশেদ আলী (৪৫) এবং গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার বড় শিমুলতলা গ্রামের জহরুল সরকার (৩৫)। তাঁরাও একাধিক ডাকাতির সঙ্গে জড়িত এবং তাঁদের বিরুদ্ধে মামলাও রয়েছে। তিনজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পীরগঞ্জ থানার পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নিশ্চিত করে গতকাল সকালে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ৫টি চাকু, লুণ্ঠিত ১ হাজার ৯৫০ টাকা ও ৪টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
বাস ডাকাতির মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ঢাকার গাবতলী থেকে জায়েদা পরিবহন চার যাত্রী নিয়ে পঞ্চগড়ের উদ্দেশে রওনা দেয়। পথে চন্দ্রা পর্যন্ত আরও ৪৭ যাত্রী বাসে ওঠে। বাসটি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ পার হওয়ার পর যাত্রী বেশে ওঠা ছয় ডাকাত চালক সুমন মিয়াকে ছুরিকাঘাত করে গাড়িটির নিয়ন্ত্রণ নেন।
ডাকাতের দল যাত্রীদের দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাঁদের কাছ থেকে ৭৯ হাজার ৭০০ টাকা, ১২টি মোবাইল ফোন, ২টি হ্যান্ডব্যাগ ও ৫ আনা ওজনের স্বর্ণের দুল লুট করে নেয়। সেই সঙ্গে বাসযাত্রী মো. সুমন মিয়াকে ছুরিকাঘাত করা হয়।
এ ঘটনায় জায়েদা পরিবহনের ম্যানেজার আপেল মাহমুদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ডাকাতদের আসামি করে পীরগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
রংপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি, সার্কেল ডি) কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ঘটনাটিকে চাঞ্চল্যকর হিসেবে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুততম সময়ে অভিযান চালিয়ে ক্লু উদ্ধার করেছি। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।’