সাভারপ্রাইভেট কারে ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে যাত্রী তুলে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে অপহরণ করে চালক ও তাঁর সহযোগীরা। যাত্রীদের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে তাঁদের পরিবারের কাছ থেকে আদায় করা হয় মুক্তিপণ। পরে মারধর করে নির্জন কোনো রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয় ভুক্তভোগীদের। আশুলিয়া থানা-পুলিশের তদন্তে বেড়িয়ে এসেছে এমনই এক চক্রের তথ্য।
গত বছরের ১৮ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৬টার দিকে গাজীপুর আদালতে যাওয়ার জন্য আশুলিয়া থানার নবীনগর এলাকা থেকে একটি প্রাইভেট কারে ওঠেন অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩১)। গাড়িতে উঠেই তিনি আরও দুজন যাত্রীকে দেখতে পান, যাদের মধ্যে একজনের নাম রবিউল ইসলাম। নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক ধরে কিছু দূর যেতেই ডিইপিজেডের সামনে থেকে ওই গাড়িতে যাত্রীবেশে আরও দুজন ওঠেন। গাড়িতে থাকা আগের ১ যাত্রী ও নতুন ওঠা ২ যাত্রীসহ গাড়ির চালক যাত্রী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও রবিউল ইসলামকে জিম্মি করেন। তাঁদের দুজনের কাছে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন। এমনকি তাঁদের কাছে থাকা এটিএম কার্ড দিয়ে টাকা উত্তোলন করে নেন। ভুক্তভোগীদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিকাশে মুক্তিপণ হিসেবে টাকা আদায় করে নেয়। ১ লাখ টাকা দাবি করলেও আল মামুনের পরিবার দেয় ১৫ হাজার টাকা ও রবিউলের পরিবার দেয় ৩০ হাজার টাকা। এই মুক্তিপণ আদায় করে, মারধর করে ভুক্তভোগীদের সিরাজগঞ্জে ফেলে প্রাইভেট কার নিয়ে পালিয়ে যায় ওই চক্রটি।
অ্যাডভোকেট আল মামুন ফিরে এসে আশুলিয়া থানায় অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর মামলা রুজু হয়। ঘটনার পর প্রায় ১০ মাস পর খোঁজ মেলে এ চক্রের মূল হোতা আবুল বাশারের। গতকাল রোববার এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ইতিমধ্যে এই চক্রের ব্যবহৃত গাড়ি এবং ছিনতাই করা দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আগেই।
মূল হোতা আবুল বাশার যশোর ইতিমধ্যে অন্য মামলায় হাজতে রয়েছেন। গত শনিবার ৩ দিনের রিমান্ড শেষে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।