কুমিল্লার লাকসামে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের পরিত্যক্ত বাড়িতে এক তরুণীকে (১৯) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এরপর পুলিশ দিনভর অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন লাকসাম উপজেলার মনোহরপুর এলাকার মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ আলী (২৫), পৌরসভার শ্রীপুর মধ্যপাড়ার মো. মমিনের ছেলে মো. মাসুদ (২৩), বাতাখালী এলাকার আবু তাহেরের ছেলে মনির হোসেন হৃদয় (২৩), উত্তর বিনই এলাকার মৃত ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে আল আমিন (২৩) ও মধ্য লাকসাম এলাকার মৃত মোস্তাফিজ মজুমদারের স্ত্রী বিলকিছ আক্তার কল্পনা (৪০)।
এদিকে আজ সোমবার সকালে গ্রেপ্তারকৃতদের কুমিল্লা আদালতে পাঠানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ওই বাড়িতে বিক্ষুব্ধ জনতার হামলা চালানোর পর থেকে সেটিতে কেউ বসবাস করে না। বর্তমানে বাড়িটি পরিত্যক্ত।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালীর সোনাপুর এলাকার এক তরুণী ও তাঁর স্বামী ১৩ মার্চ লাকসামে তাঁর নানা শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে বের হন। ১৪ মার্চ ভোরে তাঁরা লাকসাম বাইপাস মোড় থেকে বাড়ি ফেরার জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠেন। এ সময় অটোরিকশার চালক মো. মাসুদ তাঁরা স্বামী-স্ত্রী কি না জানতে চেয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। একপর্যায়ে কৌশলে লাকসামের গন্ডামারা এলাকায় নিয়ে যান। এরপর অভিযুক্তরা তাঁদের ব্যাগ তল্লাশি করেন এবং পরিকল্পিতভাবে লালমাই উপজেলার মগবাড়ি এলাকায় নিয়ে স্বামীকে ফেলে রেখে তরুণীকে অপহরণ করেন।
পুলিশ জানায়, পরে ভিকটিমকে লাকসামের বড়তুফা এলাকায় সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামের পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে অভিযুক্ত মো. মাসুদ ও মোহাম্মদ আলী তাঁকে ধর্ষণ করেন। এরপর ভিকটিমকে লাকসাম পৌর শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তালুকদার ভিলায় অভিযুক্ত বিলকিছ আক্তার কল্পনার ভাড়া বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে পুনরায় ধর্ষণ করা হয়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে লাকসাম থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজনীন সুলতানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত তদন্ত শুরু করা হয়। পুলিশ দিনভর অভিযান চালিয়ে পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার তাদের আদালতে পাঠানো হয়। আমরা এ ঘটনায় কঠোর অবস্থানে রয়েছি।’