স্বল্পমূল্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীদের কাছে ইন্টারনেট প্যাকেজ পৌঁছে দিতে গত বছরের নভেম্বর মাসে দুটি মোবাইল অপারেটরের মধ্যে একটি বেছে নেওয়ার কথা গণমাধ্যমে বলেছিলেন রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। কিন্তু প্রায় নয় মাসেও অপারেটরের সঙ্গে চুক্তি শেষ করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগ মনি বলেন, কুবি প্রশাসন বলেছিল স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট সুবিধা দেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু এ কথার এতদিনেও বাস্তবায়ন করতে পারেনি। প্যাকেজটি দ্রুত পেলে ভালো হতো। আমাদের ইন্টারনেট খরচ কমে যেত। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে এ কাজটা দ্রুত শেষ করা উচিত।
অপারেটরদের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে মোবাইল অপারেটরদের বেশ কয়েকবার মিটিং হয়েছে। সবকিছু চূড়ান্ত করে আমি রেজিস্ট্রার দপ্তরে ফাইল পাঠিয়েছি। যতটুকু মনে আছে, গ্রামীণফোনে মাসে দু শ টাকায় বিশ জিবি ইন্টারনেটের একটি প্যাকেজ চূড়ান্ত হয়েছিল। বাকিটুকু বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার থেকে জানতে পারবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘আমরা গ্রামীণফোনকে সিলেক্ট করেছিলাম। গতকাল বুধবার গ্রামীণফোনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামী সোম-মঙ্গলবারের মধ্যে আমরা এ বিষয়টি চূড়ান্ত করতে পারব।’
মো. আবু তাহের আরও বলেন, গত ২৩ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১ সেপ্টেম্বর থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সশরীরে চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণের উদ্যোগ নিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে। তারা এর আগে সুলভ মূল্যের ইন্টারনেটের জন্য স্মারকলিপি দিয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে তারা সশরীরে পরীক্ষার ব্যাপারেই জোর দিচ্ছে। তবে আমাদের যেহেতু সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেটা আমরা চূড়ান্ত করার চেষ্টা করব।
গেল বছরের ১ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত পরীক্ষা ও অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে শতভাগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দ্রুত সময়ের মধ্যে যে কোনো সিম কার্ড এর সঙ্গে ফ্রি সিম কার্ড ও পর্যাপ্ত ডাটা প্যাকের চুক্তি সম্পন্ন করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল থেকে শিক্ষা লোন প্রদান করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছিল। তখন প্রশাসন দ্রুত চুক্তি করবে বলেও জানিয়েছিল। কিন্তু এরপর আর চুক্তি চূড়ান্ত হয়নি।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, যেটুকু জেনেছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রবি ও গ্রামীণফোনের সঙ্গে বসেছিল। এরপর আর আমাদের কিছু জানায়নি। করোনা বাড়ছে এসব অজুহাতে আর এ বিষয় নিয়ে কথা হয়নি। এখনো চুক্তি চূড়ান্ত হয়নি এটা প্রশাসনের ব্যর্থতা। অনেক অসচ্ছল শিক্ষার্থী ডাটা না থাকার কারণে ক্লাস করতে পারছে না। এই প্যাকেজটি যদি আগে দেওয়া হতো তাহলে তাদের জন্য উপকার হতো।