আজ সাবেক বিশ্বসুন্দরী ও বলিউড অভিনেত্রী সুস্মিতা সেনের জন্মদিন। ঘড়ির কাঁটায় রাত ১২টা পেরোতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন সুস্মিতা। একটি সেলফি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘অবশেষে ৪৭ !!! এমনকি একটি সংখ্যা, যা গত ১৩ বছর ধরে আমাকে তাড়া করছে। সবচেয়ে অবিশ্বাস্য বছরের পথে। দীর্ঘদিন ধরে এর অপেক্ষায়… অবশেষে এর আগমনের কথা জানাতে পেরে আমি রোমাঞ্চিত!!!।’
পোস্টের নিচে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলিউড সহকর্মী থেকে ভক্তরা। অবশ্য এই ৪৭-এর মাহাত্ম্যটা কী, সেটি পরিষ্কার করেননি অভিনেত্রী।
ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের হায়দ্রাবাদ শহরে ১৯৭৫ সালের ১৯ নভেম্বর জন্ম সুস্মিতা সেনের। ভারতীয়দের মধ্যে এই বাঙালি নারী প্রথম বিশ্বস্তরের একটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় জেতেন। ১৯৯৪ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে সুস্মিতা সেন ভারতের প্রথম ‘মিস ইউনিভার্স’-এর মুকুট জেতেন।
১৯৯৬ সালে ‘দস্তক’ চলচ্চিত্র দিয়ে সুস্মিতা সেনের রুপালি পর্দায় অভিষেক। ছবিটি খুব একটা দর্শকপ্রিয়তা পায়নি। কিন্তু ১৯৯৭ সালে তামিল অ্যাকশন চলচ্চিত্র ‘রাচাগান’–এ প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৯৯ সালে ডেভিড ধাওয়ানের ‘বিবি নাম্বার ওয়ান’-এ সহ-অভিনেত্রী হিসেবে অভিনয় করেন। মূলত এর পরই বলিউডে তাঁর নামডাক হয়।
সমাজের নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দুই মেয়ে আলিশা ও রেনেকে দত্তক নিয়েছেন সুস্মিতা। সিঙ্গেল মাদার হিসেবে নিজের দায়িত্বে অবিচল তিনি। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে একাধিকবার শিরোনামে থাকলেও অভিনেত্রী তাঁর জীবন পরিচালনা করেছেন নিজের ছন্দেই। আজ ৪৭-এ পা রাখলেন সাবেক এই বিশ্বসুন্দরী।
চলচ্চিত্র নির্মাতা মানব মেননের সঙ্গেও সুস্মিতার প্রেমের গুঞ্জন জোরেশোরেই শোনা গেছে একটা সময়। ২০১১ সালে তাঁদের একসঙ্গে বেশ কয়েকবার প্রকাশ্যে দেখাও গেছে।
এরপর বলিউড অভিনেতা রণদ্বীপ হুদার সঙ্গেও তিন বছরের প্রেম ছিল সুস্মিতার। তাঁদের সখ্য ‘কার্মা অ্যান্ড হোলি’ সিনেমার শুটে। তবে প্রেম না টিকলেও বন্ধুত্ব এখনো অটুট বলে খবর।
ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানির ভাই ব্যবসায়ী অনিল আম্বানির সঙ্গেও সুস্মিতার সম্পর্ক ছিল বলে শোনা যায়। তাঁদের গোপন প্রেম নিয়ে খুব বেশি চর্চা না হলেও জানা যায়, সুস্মিতার সঙ্গে প্রেম নিয়ে ভীষণ সিরিয়াস ছিলেন অনিল। এমনকি স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদেও রাজি ছিলেন। গুঞ্জন আছে, সুস্মিতাকে ২২ ক্যারেট হিরার আংটি উপহার দিয়েছিলেন অনিল।
বলিউডের সেলিব্রিটি ম্যানেজার বান্টি সাজদিশের সঙ্গেও প্রেম ছিল সাবেক এই বিশ্বসুন্দরীর। তবে সেই প্রেমও বেশি দিন থাকেনি। কেবল সুস্মিতাই নন, বান্টির সঙ্গে অভিনেত্রী দিয়া মির্জা, নেহা ধুপিয়া, সোনাক্ষী সিনহারও প্রেম ছিল বলে শোনা যায়। বান্টি ভারতীয় তারকা ক্রিকেটার বিরাট কোহলি, শেখর ধাওয়ান ও রোহিত শর্মাদেরও ম্যানেজার ছিলেন একসময়।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যবসায়ী সাবির ভাটিয়ার সঙ্গেও নাকি সুস্মিতার সম্পর্ক ছিল। তবে তা বেশি দিন টেকেনি। এই সাবির ছিলেন ওয়েব মেইল কোম্পানি হটমেইলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। মুম্বাইয়ের অন্যতম সফল ব্যবসায়ী সঞ্জয় নারাংয়ের সঙ্গেও নাম জড়ায় সুস্মিতার। বিক্রম ভাটের সঙ্গে প্রেম ভাঙার পর অল্প কিছুদিন সঞ্জয়ের সঙ্গে প্রেম ছিল অভিনেত্রীর।
মাস কয়েক আগেই আলোচনায় উঠেছিল এই বলিউড সুন্দরীর ব্যক্তিগত জীবন। বয়সে প্রায় ১২ বছরের ছোট রোহমান শলের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর সুস্মিতার নাম জুড়েছিল প্রাক্তন আইপিএল মহাকর্তা ললিত মোদির সঙ্গে। অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠেছিল, শেষ পর্যন্ত ললিত মোদীর গলায় মালা দিচ্ছেন সুস্মিতা? যদিও সমস্ত জল্পনায় জল ঢেলে এই প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরী পরিষ্কার জানিয়েছেন, তিনি একাই আছেন। দুই মেয়ের সঙ্গে নিজের ছবি পোস্ট করে সুস্মিতা লিখেছিলেন, ‘বিয়ে নয়। আংটিও (বাগদানের সূচক) নয়। নিঃশর্ত ভালোবাসা আমায় ঘিরে রেখেছে। অনেক ব্যাখ্যা দেওয়া হলো। এবার কাজে ফেরা যাক।’
১৪ জুলাইয়ের পর আর কোনো পোস্টে একসঙ্গে দেখা যায়নি ললিত-সুস্মিতাকে।
এদিকে বিচ্ছেদের পর একাধিক জায়গায় একসঙ্গে দেখা গেছে রোহমান-সুস্মিতাকে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এক পরিবারের মতো দেখা গেছে দুই কন্যাসহ সুস্মিতা ও তাঁর প্রাক্তন সঙ্গী রোহমানকে।
বাবা বিমানবাহিনীতে ছিলেন, যার কারণে তিনি তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা এয়ারফোর্স গোল্ডেন জুবিলি ইনস্টিটিউটে করেছিলেন। দিল্লির এয়ারফোর্স স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার পর তেলেঙ্গানার জনপ্রিয় কলেজ সেন্ট আনা থেকে পড়াশোনা শেষ করেন।
এসবের মধ্যেই দীর্ঘ বিরতির পর ফের পর্দায় দেখা যাবে সুস্মিতাকে। আত্মজীবনীমূলক ওয়েব সিরিজ ‘তালি’তে মহারাষ্ট্রের রূপান্তরকামী আন্দোলনের অন্যতম মুখ গৌরী সাওয়ান্তের ভূমিকায় অভিনয় করছেন তিনি। পরিচালনার দায়িত্বে মারাঠি নির্মাতা রবি যাদব।