মীর রাকিব হাসান, ঢাকা
আলোচিত ওয়েব ফিল্ম ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’র চার অভিনয়শিল্পী সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম অভিনেত্রী নাজিফা তুষি। তাঁর বাঁ পাঁজরের হাড় ভেঙে গেছে বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। দুর্ঘটনার দুই দিন আগে তুষি বলেছিলেন ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবনার কথা।
‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ থেকে কেমন প্রশংসা পাচ্ছেন?
চরিত্রের ব্যাপ্তি খুব বেশি না হলেও যতটুকু পর্দায় ছিলাম, তা থেকে প্রশংসা পাচ্ছি। এটা মূলত চার বন্ধুর গল্প। সেখানে আমাদের পার্শ্বচরিত্রও বলতে পারেন। তারপরও যতটুকু কাজ করেছি ভালো করার চেষ্টা করেছি। যাঁদের সঙ্গে কাজ করেছি তাঁদের সবাইকে সবার আগে থেকে চেনা, সবার সঙ্গেই সবার ভালো সম্পর্ক। তাই ফান-ফুর্তিতেই কাজ হয়েছে।
শরিফুল আর আমার ক্যারিয়ার প্রায় একই সময়ে শুরু। একসঙ্গে অভিনয় শুরু। ও আমার অনেক বছরের বন্ধু। আমাদের মধ্যে অনেক খুনসুটি হয়, রাগ-অভিমান হয়। ওই সময় রাজের সঙ্গে কোনো একটা বিষয় নিয়ে ঝগড়া ছিল। কিন্তু কাজ করতে হবে আগেই কথা দেওয়া, ভেতরে-ভেতরে রাগ পুষেই খুব লুতুপুতু প্রেমের ক্যারেক্টার করেছি। এখন আমরাই বলছি, দোস্ত কাজটা যদি করা না হতো, যদি রাগের বশে কাজটা ছেড়েই দিতাম, তাহলে কিন্তু মিস করতাম। শুটিংয়ের সময় বুঝতে না পারলেও এখন বুঝতে পারছি, আমাদের বন্ধুত্বের জায়গাটা এত সুন্দর যে স্ক্রিনেও চমৎকারভাবে ফুটে ওঠে।
অভিনয়ের কর্মশালা করলেন, সেই অভিজ্ঞতা বলুন...
অসাধারণ! ‘স্পর্ধা—ইনডিপেনডেন্ট থিয়েটার কালেকটিভ’-এ অভিনয় কর্মশালা করলাম। এটির মুখ্য প্রশিক্ষক সৈয়দ জামিল আহমেদ। আমার মনে হয়েছে, অভিনয় বিষয়ে উনি বাংলাদেশের অন্যতম সেরা শিক্ষক। আমার অভিনয় ক্যারিয়ারে অন্যতম সুন্দর একটা সময় কাটালাম। অভিনয়ের বেলায় শরীর ও মন-দুটোকে কীভাবে একসঙ্গে ব্যবহার করতে হয়, অভিনয়ের সময় হাতটা কোথায় যাবে, পা-টা কোথায় থাকবে—এমন অনেক কিছু শেখার আছে। সেগুলো ঠিক থাকলে একটা চরিত্র ভালোভাবে গড়ে ওঠে।
আমি এত মেধাবী না যে নিত্যনতুন ক্যারেক্টার ট্রান্সফর্ম করতে পারি। তাই যেটাই করি একটু যত্ন নিয়ে করতে চাই। আমি ভাগ্যবান যে পরিবারের ভরণপোষণ করতে হয় না। পরিবার থেকে আমি চলার মতো সাপোর্ট পাই। যতটা আয় করি সেটা নিজের জন্য খরচ করতে পারি। অনেককে জীবিকার জন্য কাজ করতে হয়। হয়তো সে কারণে অনেককে কোয়ালিটির ব্যাপারে স্যাক্রিফাইস করতে হয়। ওই প্রেশারটা আমার না থাকায় বেছে কাজটা করতে পারি। সময় নিয়ে কাজ করি।
মুক্তি প্রতীক্ষিত ছবিগুলোর খবর কী?
আমার অভিনীত ‘স্কুটি’ নামের ওয়েব ফিল্ম মুক্তির অপেক্ষায় আছে। স্কুটিকে ঘিরে ছবির গল্প। তবে মূল বিষয় নারীদের এগিয়ে যাওয়া। স্কুটি চালানো শিখতে হয়েছে। এটি নির্মাণ করেছেন আরিফুর রহমান। যতটুকু জানি, এটি মূলত বিভিন্ন উৎসবের জন্য তৈরি করা হয়েছে। আর ‘হাওয়া’ ছবির পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ চলছে। এই ছবিতে অভিনয়ের আগে প্রায় এক বছর প্রস্তুতি নিয়েছি। তিন মাস ধরে শুটিং করেছি। এই ছবি নিয়ে মুক্তির আগে বিস্তারিত কথা হবে। অনেক গল্প আছে। মার্কেটিং পলিসির কারণে এখনই সব বলতে পারছি না। ছবিটা আমাদের সবার অনেক কষ্টের ফসল।
সাক্ষাৎকার: মীর রাকিব হাসান