ফেডারেশনকে না জানিয়ে ঢাকায় এসে শুটিং করায় নির্মাতা রাহুল মুখার্জিকে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে টালিউড নির্মাতাদের সংগঠন ‘ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’। তার সঙ্গে কাজ না করার সিদ্ধান্ত জানান টেকনিশয়ানরাও। এ ঘটনায় রাহুলের পাশে দাঁড়ান টালিউডের বেশ কজন নির্মাতা। তাঁরা এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ফলে রাহুল মুখোপাধ্যায়ের ওপর থেকে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় ডিরেক্টরস গিল্ড। কিন্তু টেকনিশিয়ানরা রাহুলের সঙ্গে কাজ না করার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। শনিবার ২৭ জুলাই রাহুল মুখোপাধ্যায়ের একটি সিনেমার শুটিংয়ে টেকনিশিয়ানরা আসেননি। তাই ওই দিন শুটিং করা যায়নি। এই ঘটনায় পরিচালক ও উপস্থিত অভিনয়শিল্পীরা অপমানিত হয়েছেন বলে জানান।
রোববার রাতে ডিরেক্টর্স গিল্ড জানায়, পরিচালক রাহুলকে নিয়ে টেকনিশিয়ানদের ফেডারেশনের এ ধরনের সিদ্ধান্ত না বদলালে সোমবার থেকে তাঁরা অনির্দিষ্টকাল কাজে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দুই পক্ষের এমন পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে আজ সকাল থেকেই স্থবির হয়ে পড়েছে টালিগঞ্জের স্টুডিওপাড়া। সারা দিনে হয়নি কোনো শুটিং।
তবে এই সমস্যা সমাধানে হাত গুটিয়ে বসে থাকেননি পরিচালকেরা। আজ দুপুরে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বালিগঞ্জের বাড়িতে সভা করেন তাঁরা। সেখানে হাজির ছিলেন শ্রীকান্ত মোহতা, রাজ চক্রবর্তী, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, গৌতম ঘোষ, বিরসা দাশগুপ্ত, সুদেষ্ণা রায়, অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী, সুব্রত সেনসহ টলিপাড়ার স্বনামখ্যাত পরিচালক-প্রযোজকেরা। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা মিটিংটি ইতিবাচক ভাবনা দিয়েই শেষ করেছেন বলে জানিয়েছেন পরিচালক-প্রযোজকেরা।
মিটিং শেষে পরিচালক গৌতম ঘোষ বললেন, ‘একটা অচল অবস্থা চলছে। আমরা সেটা কাটিয়ে উঠতে চাই। সে জন্য দুই পক্ষকেই ভাবতে হবে। কোনো কলহ না বরং পারস্পরিক সৌহার্দ্য প্রয়োজন। আমরা বিভাজনে বিশ্বাস করি না। আমাদের ছোট একটা ইন্ডাস্ট্রি। এখানে কোনো পক্ষ নেই। সবাই আমরা এক।’
দ্বন্দ্ব ভুলে সবাইকে এক হয়ে কাজে নামার জন্য হাতজোড় করে অনুরোধ জানিয়েছেন শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার থেকে এই অচল অবস্থা যাতে কেটে যায় এবং শুটিং শুরু হয় সেটাই চাই।’
রাজ চক্রবর্তী বলেন, ‘আমি সবার কাছে হাত জোড় করে বলছি আপনারা ভাবুন, আমরা যাতে কাল থেকে কাজ শুরু করতে পারি।’
অন্যদিকে, ফেডারেশনের সিদ্ধান্ত জানতে অপেক্ষা করতে হবে সন্ধ্যা পর্যন্ত। কারণ, বিকেলে রয়েছে ফেডারেশনের মিটিং। সেখানে সদস্যরা ভোটের মাধ্যমে জানাবেন কারা রাহুল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করতে চান, কারা চান না। এরপর জানানো হবে সিদ্ধান্ত।