হোম > বিনোদন > সিনেমা

সত্যজিতের পঞ্চরথী

বিনোদন প্রতিবেদক

সত্যজিৎ রায়ের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু নেপথ্যে থেকে নিরলস ভূমিকা রেখেছেন যাঁরা, পূর্ণতা দিয়েছিলেন তাঁর কালজয়ী সৃষ্টিকে, তাঁদের কথা কি আড়ালেই থেকে যাবে? তাঁরা পাঁচজন ছিলেন সত্যজিৎ রায়ের হাতের পাঁচ আঙুল। পাঁচজন বলতে ক্যামেরাম্যান, এডিটর, ফটোগ্রাফার, সেট ডিজাইনার আর মেকআপ আর্টিস্ট।

নিমাই ঘোষ, স্থির চিত্রগ্রাহক

ফটোগ্রাফার হওয়ার কথাই ছিল না তাঁর। কিন্তু একটা কুড়িয়ে পাওয়া ক্যামেরা বদলে দিল জীবন। ১৯৬৮ সাল। খবর পেলেন ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ সিনেমার শুটিং চলছে রামপুরহাটে। শুটিং দেখতে গেলেন। অভিনেতাদের নির্দেশ দিচ্ছেন সত্যজিৎ রায়। হাতের কাছে তাঁকে পেয়ে নিমাই ঘোষ কয়েকটি ছবি তুলে ফেললেন। দেখে প্রশংসা করলেন সত্যজিৎ রায়, ‘আপনি তো আমার অ্যাঙ্গেল মেরে দিয়েছেন!’ সেই থেকে যাত্রা শুরু। এরপর সঙ্গী ছিলেন শেষ ছবি ‘আগন্তুক’ পর্যন্ত। আজ আমরা সত্যজিৎ রায়ের সিনেমার যেসব স্থিরচিত্র দেখতে পাই তা নিমাই ঘোষের ক্যামেরার ম্যাজিকেই। মৃণাল সেন, ঋত্বিক ঘটক, গৌতম ঘোষ, তপন সিনহাদের সঙ্গেও পরবর্তী সময়ে কাজ করেছেন নিমাই ঘোষ।

অনন্ত দাস, রূপসজ্জাকর

‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ ছবিতে ‘ভালো রাজা’ আর ‘দুষ্টু রাজা’র চরিত্রে সন্তোষ দত্তের দ্বৈত অভিনয় মনে পড়ে? মেকআপে সেই দ্বৈত সত্তার রূপ ফুটিয়ে তুলেছিলেন অনন্ত দাশ। ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’–এ অর্জুনের চরিত্রে কামু মুখোপাধ্যায়ের সেই মেকআপ, মছলিবাবার ছদ্মবেশে ফেলুদা, ‘অশনি সংকেত’–এ যদুর পোড়া মুখ– সবকিছুর পেছনে আছে মেকআপ আর্টিস্ট অনন্তের হাত। সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে কাজের সুবাদে নিছক মেকআপম্যান নন, ‘মেকআপ আর্টিস্ট’–এর সম্মান আদায় করে নিয়েছিলেন তিনি। ‘নিধিরাম সর্দার’, ‘নীল আকাশের নিচে’র মতো সিনেমার রূপসজ্জায়ও স্মরণীয় হয়ে আছে অনন্ত দাসের কাজ।

বংশী চন্দ্রগুপ্ত, শিল্প নির্দেশক

‘নায়ক’ সিনেমার ট্রেনের কামরার সেট, কাশীতে হরিহরের বাসার ভেতরের অংশ আর উঠোন, চারুলতার ভেতরটা এসবের পেছনে আছে বংশী চন্দ্রগুপ্তর হাতের ছোঁয়া। ইউনিটে তিনিই একমাত্র মানুষ, যিনি ‘মানিক’ বলে ডাকতেন সত্যজিৎ রায়কে। পথের পাঁচালীর সময় কাজ করতে করতে সত্যজিৎ ভুলে গেলে বংশীকেই মনে করাতে হতো- ‘মানিক, কাট বলো, কাট বলো।’ বংশী মগ্ন হয়ে সেট বানাচ্ছেন দেখে ১০ দিন শুটিং পিছিয়ে দিয়েছেন সত্যজিৎ রায়। শিল্পীকে তাড়া দিয়ে বিরক্ত করেননি, এমন ঘটনাও ঘটেছে। ‘পথের পাঁচালী’ থেকে শুরু করে ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ি’ পর্যন্ত টানা দুই দশক একসঙ্গে কাজ করেছেন তাঁরা।

সুব্রত মিত্র, চিত্রগ্রাহক

জঁ রেনোয়া ‘দ্য রিভার’ সিনেমার শুটিং করতে এসেছিলেন কলকাতায়। তাঁর চিত্রগ্রাহক ক্লদ রেনোয়ার সঙ্গে পরিচয় হয় সুব্রত মিত্রর। পান স্থানীয় পর্যবেক্ষকের কাজ। তাঁর পর্যবেক্ষণের খুঁটিনাটি মুগ্ধ করেছিল জঁ রেনোয়াকেও। সেই সময় রেনোয়ার সেটের কাজ করছিলেন বংশী চন্দ্রগুপ্ত। আর শুটিং দেখতে আসতেন তরুণ সত্যজিৎ। সেই আলাপের সূত্র ধরে এই ত্রয়ীর একসঙ্গে পথ চলা শুরু ১৯৫২ সালে ‘পথের পাঁচালী’ দিয়ে। চোখের সমস্যার কারণে খুব বেশি দিন ক্যামেরার কাজ করতে পারেননি সুব্রত।

দুলাল দত্ত, সম্পাদক

‘পথের পাঁচালী’ সম্পাদনার জন্য নামমাত্র পারিশ্রমিক পাবেন জেনেও কাজ করতে রাজি হয়েছিলেন দুলাল দত্ত। রেলগাড়ি দেখতে অপু–দুর্গার সেই কাশবনের মাঝ দিয়ে ছোটার দৃশ্যের জন্য প্রয়োজনের তুলনায় কম শট নিয়েছিলেন সত্যজিৎ। উদ্ধার করতে এগিয়ে এলেন দুলাল। ওই শটগুলোকেই এমনভাবে এডিট করলেন তিনি, তাতেই তৈরি হলো গতিচিত্রের এক নতুন ভাষা। ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ ছবিতে ‘মেমোরি গেম’–এর দৃশ্যে, অথবা ‘নায়ক’-এ যখন অরিন্দমের ইন্টারভিউ থেকে কাট করে, লং শটের পর ট্রেনের প্যান্ট্রি থেকে দেখা যায় অরিন্দম স্যুটকেসটা টানতে টানতে ঢুকছেন, সেই জায়গায় এডিটিং-এর কাজ তো বিশ্বমানের। ‘মানিকবাবু’কে ছেড়ে যাবেন না বলে একসময় ‘মার্চেন্ট আইভরি’ প্রোডাকশনের সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করার লোভনীয় সুযোগ ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি।

 

আমাকে দেখে দর্শক চমকে উঠবে

সুযোগ থাকলে ‘পদাতিক’ যেন দেশের হলে মুক্তি দেওয়া হয়

টালিউডে অভিষেকের দিনে মন খারাপ পরীমণির

ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে আজকের সিনেমা

ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নাগরিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানালেন জয়া আহসান

ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে আজকের সিনেমা

ভাড়া কমিয়ে এফডিসিতে শুটিং বাড়ানোর উদ্যোগ

ঢাকায় ‘ইমার্জেন্সি’ নিষিদ্ধ হওয়ার মিথ্যা খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে

সুযোগ না থাকলে হয়তো নাটকেই থাকতাম

জনপ্রিয় হওয়ার বাসনা মানুষকে পরাজিত করছে

সেকশন