ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট পতন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। এই সরকারে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি পদত্যাগ করেছেন দাবিতে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে। সেখানে আসিফ নজরুলের মুখে ‘পদত্যাগপত্র জমা’ ও ‘রাষ্ট্রপতির কাছে’ পাঠানোর কথা শোনা যায়। ভিডিওতে দাবি করা হয়, রাজনৈতিক চাপে সমালোচনার মুখে আইন উপদেষ্টা থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন আসিফ নজরুল।
‘মুহাম্মদ রাকিব মোল্লা (Md Rakib Molla)’ নামের একটি ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে গতকাল শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। ১ মিনিট ২৫ সেকেন্ডের ভিডিওটি আজ রোববার বিকেল ৪টা পর্যন্ত দেড় শতাধিক শেয়ার হয়েছে, দেখা হয়েছে ২৫ হাজার বার।
প্রাসঙ্গিক কি–ওয়ার্ড অনুসন্ধানে ড. আসিফ নজরুলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ভিডিওটি পাওয়া যায়। পেজে ৫০ সেকেন্ডের ভিডিওটি গত ১০ আগস্ট ‘প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ’ শিরোনামে পোস্ট করা হয়। সেখানে আসিফ নজরুল বলেন, ‘প্রিয় দেশবাসী, আপনাদের সঙ্গে একটা বিশেষ সংবাদ তাৎক্ষণিকভাবে শেয়ার করার প্রয়োজন অনুভব করছি। আমাদের প্রধান বিচারপতি কিছুক্ষণ আগে পদত্যাগ করেছেন। ওনার পদত্যাগপত্র কিছুক্ষণের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ে এসে পৌঁছেছে। এটা উপযুক্ত প্রসেসিংয়ের জন্য আমরা কাল বিলম্ব না করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দিব এবং আমি আশা করব, এটা খুব দ্রুত এবং কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শুধুমাত্র প্রধান বিচারপতির পদত্যাগপত্রই পেয়েছি, অন্যদের ব্যাপারে কোনো আপডেট নাই। আপনারা সবাই শান্ত থাকবেন। দেশের সম্পদ নষ্ট করবেন না।’
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ১০ আগস্ট তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল বিভাগের বিচারপতিদের দুপুর ১টার মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এর আগে ওই দিন সকালে ফুলকোর্ট সভা ডেকেছিলেন বাংলাদেশের বিদায়ী প্রধান বিচারপতি। এই ঘটনায় প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিতে হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে ঢল নামে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের। তাদের প্রবল প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে সেই সভা বাতিল করা হয়। পরে ঘটনা পরম্পরায় পদত্যাগ করেন প্রধান বিচারপতি।
প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের সেই সংবাদটিই নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ভিডিও পোস্ট করে জানান আইন উপদেষ্টা। সেটার কিছু অংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন আসিফ নজরুল।