হোম > স্বাস্থ্য

ডেঙ্গু থেকে সতর্ক থাকুন

প্রফেসর ডা. এ কে এম মূসা 

সাধারণত বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যায়। স্ত্রী এডিস মশার কামড়ে এ রোগ হয়।

ডেঙ্গুর সাধারণ লক্ষণ
১০১ থেকে ১০৪ ডিগ্রি তাপমাত্রার জ্বর, শরীরে ব্যথা, মাথার তীব্র যন্ত্রণা, চোখব্যথা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, ক্ষুধামান্দ্য, বমি বমি ভাব, বমি করা, গলাব্যথা, কাশি ইত্যাদি। শরীরে র‍্যাশ দেখা দেওয়া।

তীব্র ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ
»    প্রচণ্ড পেটব্যথা 
»    ক্রমাগত বমি 
»    অনিয়ন্ত্রিত পাতলা পায়খানা 
»    রক্তক্ষরণ 
»    শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হওয়া 
»    শরীর নিস্তেজ হওয়া  
»    বিরক্তি ও অস্থিরতা 
»    ডেঙ্গু হলে জ্বর সাধারণত ১ থেকে ৭ দিন থাকতে পারে।

সংকটকাল
»    জ্বর ছেড়ে যাওয়ার পরের ২৮ থেকে ৪৮ ঘণ্টা কঠিন সময়। হঠাৎ রক্তচাপ কমে যাওয়া ও অন্যান্য জটিলতা দেখা দেয় এ সময়। 
»    ডেঙ্গু-হেমোরেজ হলে শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্লিডিং হয়।
»    ডেঙ্গু শক সিনড্রোম হলে প্লাজমা লিকেজ, রক্তনালি থেকে জলীয় অংশ বেরিয়ে গিয়ে প্রেশার কমে যায় এবং উপযুক্ত চিকিৎসা না হলে মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে। 

পরীক্ষা-নিরীক্ষা
»    জ্বরের এক দিন পরেই সিবিসি ও এনএসওয়ান এজি অ্যান্টিজেন টেস্ট করাতে হবে। 
»    ৪ থেকে ৫ দিন পর সিবিসি ও অ্যান্টি ডেঙ্গু অ্যান্টিবডি আইজিজি ও আইজিএম টেস্ট করাতে হবে। রোগীর জটিলতা হলে অন্যান্য টেস্ট করার প্রয়োজন হবে।

ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়ার পর করণীয়
»    বাসায় বিশ্রাম নিতে হবে, জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল খেতে হবে, গা মুছে দিতে হবে।
»    তরল খাবার, যেমন স্যালাইন, ডাব, স্যুপ, ফলের জুস, দুধ খাবেন দুই থেকে আড়াই লিটার। অন্যান্য খাবারও খাবেন।
»    দিনে কয়েকবার রক্তচাপ চেক করতে হবে।
»    প্রস্রাবের পরিমাণ লক্ষ করুন। এর পরিমাণ কম হলে ও ব্লাড প্রেশার কমে গেলে শিরায় স্যালাইন দিতে হবে। দ্রুত চিকিৎসক ও হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে।
»    প্রতিদিন সিবিসি টেস্ট করাতে হবে।

কখন হাসপাতালে নিয়ে যাবেন
»    পেটে প্রচণ্ড ব্যথা হলে
»    প্রচণ্ড বমি হলে
»    পেটে, বুকে বা শরীরের কোথাও পানি জমলে
»    রক্তক্ষরণ হলে
»    হেমাটোক্সিট বেড়ে গেলে
»    প্লাটিলেটের পরিমাণ ৫০ হাজারের নিচে নামলে
»    প্রস্রাব কমে গেলে

আইসিইউতে কখন নিতে হবে
»    ডেঙ্গু শক সিনড্রোম হলে
»    প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট হলে
»    লিভার, মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড বা কিডনির জটিলতা দেখা দিলে

ডেঙ্গু হলে যা করবেন না
»    আতঙ্কিত হবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসা নিন।
»    ব্যথানাশক ওষুধ খাবেন না।
»    প্লাটিলেট নিয়ে আতঙ্কিত হবেন না। প্লাটিলেটের পরিমাণ ১০ হাজার হলেও যদি হেমাটোক্সিট ঠিক থাকে, রক্তক্ষরণ না হয়, তাহলে অপেক্ষা করুন। প্লাটিলেটের পরিমাণ দু-এক দিনের মধ্যে বাড়তে শুরু করবে।
»    স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ খাবেন না।

সতর্কতা
গর্ভবতী, শিশু-কিশোর, ডায়াবেটিসের রোগী ও অন্যান্য ক্রনিক অসুখ থাকলে সতর্ক থাকতে হবে বেশি।

প্রতিরোধে
»    ডেঙ্গুর কোনো ভ্যাকসিন নেই। ডেঙ্গুর প্রতিরোধে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ ও নিধন মূল কাজ।
»    ব্যক্তিগত পর্যায়ে ফুলের টব, ফুলদানি, ডাবের খোসা ইত্যাদি এবং ঘরে ও আশপাশে জমে থাকা পানি পরিষ্কার রাখতে হবে।
»    মশানিধন অভিযান জোরদার করতে হবে।
»    ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করুন।
»    ডেঙ্গু রোগীকে দিনের বেলায়ও মশারির নিচে থাকতে হবে। এতে বাসার অন্য সদস্যদের ডেঙ্গু কম হবে।

লেখক: মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, বিভাগীয় প্রধান, মেডিসিন বিভাগ, বারডেম জেনারেল হাসপাতাল ও ইব্রাহীম মেডিকেল কলেজ

ব্যথার ওষুধের বিকল্প ভাবা হয় লবঙ্গকে

গর্ভাবস্থায় মেথি খাওয়া যায়

কাঁধ নাড়াচাড়া করতে না পারলে

শীতকালে পানিশূন্যতায় স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং প্রতিকার

চোখের সমস্যা থেকে মাথাব্যথা হতে পারে

নিয়মিত চা পানকারীরা কেন দীর্ঘায়ু হন, জানালেন বিজ্ঞানীরা

এইচএমপিভিতে মহামারির আশঙ্কা কম, অভিমত বিএসএমএমইউর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের

দেশে এইচএমপিভিতে আক্রান্ত একমাত্র রোগীর মৃত্যু

এইচএমপিভি ভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা

দেশে এইচএমপিভি ভাইরাস শনাক্ত, আক্রান্ত একজন নারী

সেকশন