আর্দ্রতাযুক্ত আবহাওয়ায় বিভিন্ন ধরনের চোখের রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। এর মধ্যে কনজাংটিভাইটিস, ইউভাইটিস, স্টাই ও কর্নিয়ার ক্ষত অন্যতম।
কনজাংটিভাইটিস
কনজাংটিভা হলো স্বচ্ছ পর্দার মতো অংশ। ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা অন্য কোনো কারণে কনজাংটিভাতে প্রদাহ হলে সেটিই কনজাংটিভাইটিস। এটি একধরনের সংক্রামক রোগ।
লক্ষণ: চোখ লাল হওয়া, চোখ থেকে হলুদ আঠালো পদার্থ বের হওয়া, চোখ থেকে পানি পড়া, চোখে চুলকানি এর সাধারণ লক্ষণ।
ইউভাইটিস
ইউভিয়া বা চোখের মধ্যস্তর এবং তার চারপাশের টিস্যুর প্রদাহকে ইউভাইটিস বলে। এটি রোগীর এক বা উভয় চোখকে প্রভাবিত করে। চোখে আঘাত, বিভিন্ন জীবাণুর সংক্রমণ, যোজক কলার রোগ ইত্যাদির কারণে এই রোগ হতে পারে ।
লক্ষণ: চোখে ব্যথা, ঝাপসা দৃষ্টি, চোখ লাল হওয়া, আলো সহ্য না হওয়া এ রোগের লক্ষণ।
স্টাই
এটি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণজনিত রোগ। আমাদের চোখের পাতার গোড়ার কাছে এক বা একাধিক ছোট গ্রন্থি রয়েছে। বন্যার পানির ময়লা বা অন্যান্য পদার্থ এই গ্রন্থিগুলোতে আটকে গিয়ে রোগটি তৈরি হতে পারে।
লক্ষণ: চোখ লাল হওয়া, চোখে ব্যথা ইত্যাদি এ রোগের প্রাথমিক লক্ষণ।
কর্নিয়ায় ক্ষত
কর্নিয়া হলো আমাদের চোখের সবচেয়ে সামনের স্বচ্ছ অংশ। বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক বা পরজীবীর সংক্রমণের কারণে কর্নিয়ায় ক্ষত হয়ে থাকে।
লক্ষণ: চোখব্যথা, লাল হওয়া, পানি পড়া, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া এর লক্ষণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
চিকিৎসা
» ভাইরাস সংক্রমণ হলে সাধারণত বিশ্রাম, ঠান্ডা সেঁক এবং চোখের ড্রপ ব্যবহার করলে লক্ষণগুলো উপশম হয়।
» ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক চোখের ড্রপ বা মলম প্রয়োজন হতে পারে।
» অ্যালার্জির কারণে চোখের রোগের জন্য অ্যালার্জির ওষুধ সাহায্য করতে পারে।
প্রতিরোধে করণীয়
» ঘন ঘন চোখ ঘষা থেকে বিরত থাকতে হবে।
» নোংরা হাতে চোখ স্পর্শ থেকে বিরত থাকুন।
» ব্যবহার্য রুমাল বা তোয়ালে অন্য কাউকে ব্যবহার করতে দেবেন না।
» চোখে সংক্রমণ হলে চোখের মেকআপ এড়িয়ে চলুন।
» ব্যবহার্য কন্টাক্ট লেন্স কাউকে ব্যবহার করতে দেবেন না।
» চোখের সুরক্ষা চশমা ব্যবহার করুন।
» যেকোনো জলাধারে সাঁতার কাটার সময় সুইমিং গগলস বা সাঁতারের চশমা পরে নিন।
ডা. মো. আরমান হোসেন রনি, চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও সার্জন , জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল , শেরেবাংলা নগর, ঢাকা।