Ajker Patrika
হোম > স্বাস্থ্য > চিকিৎসকের পরামর্শ

ইসকেমিক কার্ডিওমায়োপ্যাথির ঝুঁকিতে যাঁরা

ডা. নূরুন নাহার (মহুয়া)

ইসকেমিক কার্ডিওমায়োপ্যাথির ঝুঁকিতে যাঁরা

ইসকেমিক কার্ডিওমায়োপ্যাথি হলো হৃৎপিণ্ডের পেশির সমস্যা। এর ফলে হৃৎপিণ্ড ভালোভাবে রক্ত পাম্প করতে পারে না। ফলে হৃৎপিণ্ডের মারাত্মক ক্ষতি হয়। এই রোগে ওষুধে কাজ না হলে অপারেশনও দরকার হতে পারে। ইসকেমিক কার্ডিওমায়োপ্যাথিতে আক্রান্ত রোগীর বাঁ ভেন্ট্রিকল দুর্বল ও বড় হয়। বাঁ ভেন্ট্রিকল হলো হার্টের প্রধান পাম্পিং চেম্বার। তাই দুর্বল বাঁ ভেন্ট্রিকল হৃৎপিণ্ডে রক্ত পাম্প করার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

লক্ষণ

শ্বাসপ্রশ্বাসে দুর্বলতা অনুভব করা, পা ফুলে যাওয়া, খুব বেশি ক্লান্তিবোধ করা, প্রতিদিনের কাজকর্ম ও ব্যায়াম করার শক্তি না পাওয়া, প্রায়ই বুকে ব্যথা ও কাশি হওয়া এ রোগের লক্ষণ। এ ছাড়া হঠাৎ হঠাৎ বুক ধড়ফড় করা, মাথা ঘোরা বা মাঝে মাঝে হালকা মাথাব্যথা হওয়া দেখা যেতে পারে লক্ষণ হিসেবে। আক্রান্ত কারও কারও ইসকেমিক কার্ডিওমায়োপ্যাথির কোনো লক্ষণ না-ও থাকতে পারে।

কারণ

করোনারি আর্টিলারি রোগ, হার্ট অ্যাটাক, করোনারি ভাস্কুলাইটিস, করোনারি আর্টারি ডিসেকশন, মাইক্রোভাসকুলার রোগ, ফাইব্রোমাসকুলার ডিসপ্লাসিয়া, প্রিঞ্জমেটাল এনজাইনা রোগের কারণে ইসকেমিক কার্ডিওমায়োপ্যাথি হতে পারে।

ঝুঁকিতে কারা

হৃদ্‌রোগ আর হার্ট অ্যাটাকের পারিবারিক ইতিহাস যাঁদের আছে, তাঁদের এ রোগের ঝুঁকি বেশি। এ ছাড়া উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপানের প্রবণতা, ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল, বিএমআই ৩০-এর বেশি হলে এবং শারীরিকভাবে সক্রিয় না থাকলে এ রোগের ঝুঁকি বাড়ে।

রোগনির্ণয়

প্রাথমিকভাবে একজন কার্ডিওলজিস্ট রোগীর রোগ ও পারিবারিক ইতিহাস জেনে নেবেন। এরপর উপসর্গ জেনে সে অনুযায়ী রোগীর রক্ত পরীক্ষা, ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাম, বুকের এক্স-রে, ট্রান্সথোরাসিক ইকোকার্ডিওগ্রাম, ট্রেডমিল টেস্ট, কার্ডিয়াক ক্যাথেটারাইজেশন করাবেন। এ ছাড়া প্রয়োজন হলে এমআরআই স্ক্যান, নিউক্লিয়ার মেডিসিন ইমেজিং, মায়োকার্ডিয়াল বায়োপসিও করতে দিতে পারেন।

চিকিৎসা

প্রথমে কার্ডিয়াক ফাংশন উন্নয়নের জন্য চিকিৎসা করাতে হবে। বুকে ব্যথার জন্য যেসব ওষুধের প্রয়োজন, সেগুলো চিকিৎসকের পরামর্শে

খেতে হবে। ওষুধ সেবনের পাশাপাশি লাইফস্টাইল পরিবর্তন করতে হবে। ধূমপানের অভ্যাস থাকলে ছেড়ে দিতে হবে। ওষুধে কাজ না হলে সার্জারি দরকার হলেও চিকিৎসক বলে দেবেন। প্রয়োজনে ডিভাইস প্রতিস্থাপন করতে হতে পারে।

প্রতিকার

  • প্রতিদিন খাবারে লবণের পরিমাণ ২ থেকে ৩ মিলিগ্রামের মধ্যে রাখতে হবে।
  • চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সপ্তাহে ৫ দিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করতে হবে।
  • মেডিটারেনিয়ান ডায়েট অনুসরণ করতে হবে।
  • দেহের উচ্চতা অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে হবে।
  • মানসিক চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে।
  • ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
  • প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।
  • বাঁ ভেন্ট্রিকল কতটা রক্ত পাম্প করতে পারে, নির্দিষ্ট সময় পরপর তা পরীক্ষা করাতে হবে।
  • চেকআপের সময় ওষুধ কতটা ভালো কাজ করছে, জানা থাকতে হবে।
  • ডিভাইস লাগানো হলে নিয়মিত তার অবস্থা পরীক্ষা করতে হবে।

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন

  • শ্বাস নিতে কষ্টবোধ করলে।
  • বুকে ব্যথা অনুভব করলে।
  • অজ্ঞান হয়ে পড়লে।

ডা. নূরুন নাহার (মহুয়া): সহকারী অধ্যাপক ও কনসালট্যান্ট কার্ডিওলজি বিভাগ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউট, মিরপুর, ঢাকাহৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ

চেম্বার: আলোক হেলথকেয়ার, মিরপুর ১০

ক্রনিক কিডনি ডিজিজে (সিকেডি) আক্রান্ত রোগীদের রোজা রাখা

গ্লকোমার জন্য যাদের চক্ষু পরীক্ষা জরুরি

লিভার সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ ও প্রতিকার

রোজায় সঠিক পুষ্টি

স্বাস্থ্যগত সঠিক নিয়মে রোজা পালনের চেষ্টা করুন

শিশুদের ভাইরাসজনিত জ্বর হলে কী করবেন

ডিম্বাশয় ক্যানসারের ঝুঁকিতে যারা

মুখে অবাঞ্ছিত লোম হলে মেয়েদের কী করতে হবে

স্বল্প ওজনের অপরিণত নবজাতক জন্ম নেওয়া রোধে যা করতে হবে

নাকের অ্যালার্জি কী করে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন