হোম > স্বাস্থ্য > চিকিৎসকের পরামর্শ

ডায়াবেটিসে ঝুঁকি ও প্রতিরোধ

লে. কর্নেল ড. : নাসির উদ্দিন আহমদ

এক জটিল বিপাকীয় ব্যাধি। পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তিদের প্রতি ১০ জনে একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এতে রক্তে গ্লুকোজ বা শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। মূলত ইনসুলিন নামক একটি হরমোনের অভাব কিংবা নিষ্ক্রিয়তার কারণে এমনটি হয়ে থাকে। দীর্ঘস্থায়ী এই রোগের ঝুঁকি সম্পর্কে জানা খুবই জরুরি।

বয়স বাড়লে ঝুঁকি

বয়স বাড়ার সঙ্গে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়তে থাকে। চল্লিশে পা রাখলে এই ঝুঁকি বেড়ে যায়। যদিও ইদানীং বয়স ত্রিশের কোটায় পৌঁছানোর আগেই অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন ডায়াবেটিসে। তবু বলা যায়, চল্লিশে পা দিলে সবার উচিত রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করা।

মুটিয়ে গেল বিপদ

মুটিয়ে গেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বিশেষত পেটের মেদ বেড়ে যাওয়া ডায়াবেটিসের জন্য একটি বড় ঝুঁকি। শরীরে যত বেশি মেদ ভুঁড়ি যোগ হবে ঝুঁকিও বাড়বে সমানতালে। যাদের বিএমআই ২৩ এর বেশি তাঁদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি। বিএমআই হচ্ছে বডি মাস ইনডেক্স। সোজা কথায় বললে দেহের উচ্চতা অনুসারে ওজন কত হওয়া উচিত তার অনুপাত। বিএমআই নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ব্যক্তির ওজন কেজিতে নির্ণয় করে তাকে উচ্চতার মিটারের বর্গ দিয়ে ভাগ করতে হবে।

আরাম–আয়েশি জীবন

ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে বড় ঝুঁকি হিসেবে কাজ করে আরাম-আয়েশের জীবন। শারীরিক পরিশ্রম, হাঁটাহাঁটি কিংবা শরীরচর্চা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। বিপরীতে শুয়ে-বসে অনবরত খেয়ে খেয়ে মুটিয়ে গেলে ঝুঁকি বেড়ে যায়। এমনকি শারীরিক পরিশ্রমের অভাবে তরুণ বয়সেও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে।

পরিবারে ডায়াবেটিস হলে ঝুঁকি

যাদের রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয় পরিজনের ডায়াবেটিস রয়েছে তাঁরা অন্যদের তুলনায় বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। যেমন: মা, বাবা, ভাই-বোন, চাচা-ফুপু, মামা খালাদের ডায়াবেটিস থাকে তবে ঝুঁকি কিন্তু বেড়ে গেল। বিশেষত টাইপ-২ ডায়াবেটিসে এমন ঘটনা ঘটে।

মায়েদের ঝুঁকি

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস, ৯ পাউন্ডের চেয়ে বেশি ওজনের সন্তান জন্ম দেওয়া মায়েরা ঝুঁকিতে আছেন। যেসব নারীর পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম নামক রোগ রয়েছে তাদেরও এই রোগের ঝুঁকি বেশি।

উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল

যারা সবেমাত্র উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হয়েছেন কিংবা এ জন্য ওষুধ সেবন করছেন তারাও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। রক্তে চর্বির মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। বিশেষত, ট্রাই-গ্লিসারাইডের মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ২৫০ মিলিগ্রামের বেশি কিংবা এইচডিএলের মাত্রা ৩৫ মিলিগ্রামের নিচে থাকলে ঝুঁকি তৈরি হয়। আর রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করে যদি পাওয়া যায় প্রাক-ডায়াবেটিস তবে ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। আর অনেকগুলো ঝুঁকি একসঙ্গে থাকলে তো কথাই নেই।

প্রতিরোধ

ডায়াবেটিস প্রতিরোধে কতগুলো করণীয় হচ্ছে—

  • চিনি এবং মিহি শর্করা জাতীয় খাবার বর্জন করা
  • একবারে অল্প পরিমাণ খাবার গ্রহণ করা
  • তন্তু বা ফাইবার জাতীয় খাবার গ্রহণ করা
  • যে সমস্ত খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি (যেসব খাবার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি করে) সেগুলো পরিহার করা। 
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা। 
  • ধূমপান পরিহার করা। ধূমপানের ফলে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বেড়ে যায়। 
  • প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট শারীরিক কসরত বা ব্যায়াম করার অভ্যাস তৈরি করা। 
  • রক্তে চর্বির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা। রক্তের কোলেস্টেরল ২০০ এলডিএল ১০০ এইচডিএল ২০ এর ওপরে এবং ট্রাই গ্লিসারাইড ১৫০ এর নিচে রাখা। 
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা। 
  • কোমল পানীয় পরিহার করে সাধারণ পানি পান করা।

লেখক: মেডিসিন স্পেশালিস্ট ও এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, সিএমএইচ, ঢাকা ও আল-রাজি হাসপাতাল, ঢাকা

গর্ভাবস্থায় মেথি খাওয়া যায়

কাঁধ নাড়াচাড়া করতে না পারলে

ওজন কমাতে ডায়েট কেমন হবে

স্ক্যাবিস বা চুলকানি রোগের প্রতিকার ও চিকিৎসা

শারীরিক ভঙ্গিজনিত কোমর ব্যথা এড়াতে যা করতে হবে

চোখেও হতে পারে ক্যানসার

চোখে মাংস বেড়ে গেলে

এই শীতে কানের সমস্যা প্রতিরোধে যা করবেন

হ্যান্ড, ফুট ও মাউথ রোগে ভয়ের কারণ নেই

রক্তনালিতে টক্সিন জমলে যা করবেন

সেকশন