হোম > বিশ্ব > এশিয়া

হারানো শহর ফিরে পেতে মরিয়া মিয়ানমারের চিন রাজ্যের বিদ্রোহীরা

অনলাইন ডেস্ক

সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী চিন ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সের (সিএনডিএফ) সদস্যরা। ছবি: আল জাজিরার সৌজন্যে

পশ্চিম মিয়ানমারের খ্রিষ্টান অধ্যুষিত ঘন পাহাড়ি অঞ্চল চিন। এ অঞ্চলে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী চিন ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সের (সিএনডিএফ) সদর দপ্তর। সম্প্রতি এখানে একটি বিশেষ প্রতিবেদন তৈরি করতে গিয়েছিল কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার একটি দল। এ প্রতিবেদনে ফুটে উঠেছে, সিএনডিএফ কীভাবে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ও নিজেদের শহর ফিরে পেতে লড়াই করছে।

সিএনডিএফের সদর দপ্তরের একটি দেয়ালে নিহত যোদ্ধাদের ছবি সাজানো। সেখানে প্রায় ৮০ তরুণ যোদ্ধার নাম রয়েছে। যাঁদের মধ্যে প্রথমে রয়েছেন ২৮ বছর বয়সী সালাই কুং নাও পিয়াং। তিনি ২০২১ সালের মে মাসে নিহত হন। চিন ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সের জন্য এ তালিকা শুধু স্মৃতি নয়, এটি তাদের দীর্ঘ সংগ্রামের প্রতীক।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর গঠিত সিএনডিএফ এখন চিন রাজ্যের ফালাম শহর দখলের জন্য অভিযান চালাচ্ছে। এ অভিযানের কোড নাম দেওয়া হয়েছে ‘মিশন জেরুজালেম’। এ অভিযানে ইতিমধ্যে প্রায় ৫০ সিএনডিএফ ও তাঁদের মিত্র যোদ্ধারা নিহত হয়েছেন।

সিএনডিএফের ভাইস প্রেসিডেন্ট পিটার থাং জানান, কিছুদিন আগে ফালামের পাহাড়ের চূড়ায় একটি সেনাঘাঁটি দখল করতে গিয়ে জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় কিছু যোদ্ধা মাটির বাংকারে জীবন্ত সমাহিত হন। তবে থাং অনুমান করেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর একই রকম ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং ১০০-এর বেশি সরকারি সেনাকে বন্দী করা হয়। ওই অভিযানের পর ঘাঁটিটি এখন বিদ্রোহীদের দখলে।

থাং জানান, সিএনডিএফের মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ছিল সেনাবাহিনীর বিমান হামলা। তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর কাছে অনেক প্রযুক্তি রয়েছে। আমাদের অস্ত্র সীমিত ও কিছু অস্ত্র চালানোর মতো দক্ষতা নেই। আমাদের লক্ষ্য শুধু ফালাম দখল নয়, বরং মিয়ানমারের সামরিক শাসন সম্পূর্ণভাবে উৎখাত করা।’

অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে চিনের স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো দুটি ভাগে বিভক্ত—একটি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (সিএনএফ) ও অন্যটি চিন ব্রাদারহুড (সিবি)। তাদের মধ্যে মূল বিবাদ হলো চিনের ভবিষ্যৎ কে নির্ধারণ করবে। সম্প্রতি দুটি গ্রুপ একত্র হয়ে চিন ন্যাশনাল কাউন্সিল গঠনের ঘোষণা দিয়েছে, যার লক্ষ্য বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপকে এক সামরিক নেতৃত্ব ও প্রশাসনের অধীনে নিয়ে আসা।

মিয়ানমার বিশ্লেষক আর লাখের জানান, চিন রাজ্যের ৭০ শতাংশের বেশি এলাকা মুক্ত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘জান্তা গোটা মিয়ানমারে পরাজিত হচ্ছে। কিন্তু গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর ঐক্য প্রয়োজন।’

ফালামের যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত মানুষদের অনেকে সেতুর নিচে ও ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনেক তরুণ-তরুণী এখন যুদ্ধে যোগ দিতে প্রস্তুত। ১৫ বছর বয়সী জুনিয়র (ছদ্মনাম) নামের এক মেয়ে চিনের চিকিৎসা শিবিরে নার্সের কাজ করে। সে বলে, ‘আমি যা করতে পারব, করব। মিয়ানমারে পড়াশোনার কোনো উপায় নেই। আমি চাই না ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এ পরিস্থিতির মুখোমুখি হোক। তাই বিদ্রোহীদের সঙ্গে কাজ করছি। আমরা ফালাম ফিরে চাই।’

ফালাম দখলের লড়াই মিয়ানমারের চিন বিদ্রোহীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হতে পারে। তবে এ সংগ্রামে ঐক্য ও সংহতি অপরিহার্য। চিন রাজ্যের মানুষদের জন্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বিদ্রোহীদের একত্র হওয়া এবং সামরিক শাসনের অবসান ঘটানো এখন মূল চ্যালেঞ্জ।

পালানোর সময় কৌতুক অভিনেতাকে ধরে ফেলল রাশিয়া

নায়ক নাকি রাশিয়ার চর, বিলিয়নিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বিভক্ত জর্জিয়া

ক্রিকেটার পরিচয়ে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের চেষ্টা, বিমানবন্দরে আটক ১৫ বাংলাদেশি

যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে ছিন্নভিন্ন করে গাজায় ফের হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েল

কোকাকোলা থেকে কোলগেট, মার্কিন পণ্য বর্জনের ডাক উঠেছে ইউরোপজুড়ে

রমজানেও থেমে নেই ইসরায়েলি বর্বরতা, গাজায় কয়েক ঘণ্টায় নিহত ৪ শতাধিক

স্ট্যাচু অব লিবার্টি ফেরত চাইলেন ফরাসি আইনপ্রণেতা, একহাত নিল হোয়াইট হাউস

আওরঙ্গজেবের সমাধি নিয়ে উত্তপ্ত নাগপুর, অনির্দিষ্টকালের কারফিউ জারি

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বাংলাদেশের সঙ্গে সক্রিয় যোগাযোগের পরামর্শ সংসদীয় কমিটির

পেরুতে আইনশৃঙ্খলার ব্যাপক অবনতি, জরুরি অবস্থা জারি