অনলাইন ডেস্ক
তালেবানের বেত্রাঘাত আর মানুষের ঠেলাঠেলি হজম করে কাবুল বিমানবন্দরের একটি গেটে হাজির হন শরীফা আফজালি। তাঁর এক হাতে তখন একটি বিবাহ সনদ আরেক হাতে মোবাইল ফোন। তিনি মোবাইলটি গেটে দাঁড়ানো এক মার্কিন সেনার দিকে এগিয়ে দেন। ফোনের ওপাশে তখন সাবেক মার্কিন সেনা হেন্স রাইট। বাস করেন যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমায়। তাঁর কথাতেই কাজ হয়। কোনো ভিসা ছাড়াই আফজালিকে বিমানবন্দরের ভেতরে প্রবেশ করতে দেন সৈন্যটি।
আফজালি হেন্স রাইটের স্ত্রী। ২০০৯ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন হেন্স। পরে আফগান স্পেশাল ফোর্সের উপদেষ্টা হিসেবে চুক্তিভিত্তিক কোম্পানির হয়ে কাজ শুরু করেন। সেই কোম্পানির কর্মী ছিলেন আফজালিও। ২০১৭ সালেই প্রথম তাঁদের পরিচয়।
২০১৯ সালে আফজালি অন্য জায়গায় কাজ শুরু করলেও সামাজিক মাধ্যমে হেন্সের সঙ্গে যোগাযোগ চালু থাকে। গত এপ্রিলেই তাঁরা দুবাই গিয়ে বিয়ে করেন। বিয়ের সনদ থাকলেও আফজালির ভিসাপ্রক্রিয়ায় জটিলতা দেখা দেয়। কারণ, ২০১৮ সালেই তিনি মার্কিন ভিসার আবেদন করে রেখেছিলেন। তাই নতুন করে ভিসা আবেদনের সুযোগ ছিল না।
মে মাসে আফজালিকে আফগানিস্তানে রেখে যুক্তরাষ্ট্রে যান হেন্স। এদিকে, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই দেশটি দখল করে নেয় তালেবান। বিমানবন্দরে হুমড়ি খেয়ে পড়ে মানুষ। স্ত্রীর চিন্তায় অধৈর্য হন হেন্সও। পরে ২৪ আগস্ট আফজালিকে যেভাবেই হোক বিমানবন্দরের গেটে পৌঁছাতে বলেন।
সেদিন সকাল ৮টায় বাড়ি থেকে বের হন আফজালি। সারা দিন প্রচণ্ড গরম আর মানুষের ঠেলাঠেলি ছাড়াও বেশ কয়েকবার তালেবানের বেত্রাঘাতের শিকার হন তিনি। ১৬ ঘণ্টার চেষ্টায় একটি গেটে গেলেও ভিসা না থাকায় তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাঁর সঙ্গে ফোনে সার্বক্ষণিক যুক্ত ছিলেন হেন্স। তিনি চেষ্টা চালিয়ে যেতে বলেন। এভাবে দুইবার ব্যর্থ হওয়ার পর তৃতীয়বার মোবাইল ফোনের কথোপকথনে কাজ হয়ে যায়। শুক্রবার জার্মানি পৌঁছেন আফজালি। সেখান থেকেই যাবেন যুক্তরাষ্ট্রে।