করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে জাপানে রেকর্ড পরিমাণ শিশু আত্মহত্যা করেছে। শিশুদের আত্মহত্যার সংখ্যা এতটাই বেড়েছে যে, গত চার দশকের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জরিপের তথ্য অনুযায়ী, করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে ৪১৫ জন শিশু শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। গত বছর স্কুল বন্ধ হওয়ার পর কয়েকবার খোলার চেষ্টা করা হলেও করোনার কারণে জাপানে শ্রেণিকক্ষের শিক্ষা কার্যক্রম বারবারই ব্যাহত হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাপানের সংবাদমাধ্যম আশাহির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা মহামারির মধ্যে আত্মহত্যা করা শিশুদের সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১০০ জন বেশি। ১৯৭৪ সাল থেকে জাপানে শিশু শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা-সংক্রান্ত রেকর্ড রাখা শুরু হয়।
রয়টার্স বলছে, জাপানে মানুষের আত্মহত্যা প্রবণতার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। দেশটির অনেক মানুষ যেকোনো ধরনের লজ্জা বা অসম্মানজনক পরিস্থিতি এড়াতে আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়াকে উত্তম মনে করে। জাপানিদের আত্মহত্যার হার জি-৭ ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষে ছিল।
তবে এই আত্মহত্যার সংখ্যা গত ১৫ বছরে প্রায় ৪০ শতাংশ কমেছিল। এর মধ্যে ২০০৯ সাল থেকে টানা ১০ বছর আত্মহত্যার সংখ্যা ছিল নিম্নমুখী। তবে বৈশ্বিক মহামারি শুরুর পর জাপানে ফের আত্মহত্যার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। মহামারির মধ্যে আবেগ ও আর্থিক চাপের কারণে জাপানি নারীদের মধ্যেও বেড়েছে আত্মহত্যার প্রবণতা। তবে পুরুষেরাও রয়েছেন এই তালিকায়, যদিও এই সংখ্যা নারীদের তুলনায় কম।
জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, গত ৩০ দিনে জাপানে রেকর্ড ১ লাখ ৯৬ হাজার ১২৭ শিশি অনুপস্থিত রয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জাপানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকেকে বলেন, করোনার কারণে স্কুল ও পারিবারিক পরিবেশে বড় পরিবর্তন এসেছে, যা শিশুদের আচরণে প্রভাব ফেলছে।