ইচ্ছাকৃতভাবে দক্ষিণ ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যকার সামরিক সীমান্তরেখা (মিলিটারি ডিমারকেশন লাইন) অতিক্রম করায় এক মার্কিন নাগরিককে আটক করেছে উত্তর কোরিয়া। তবে সেই ব্যক্তি সাধারণ কোনো মার্কিন নাগরিক নন, বরং মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীর একজন সদস্য। উত্তর কোরিয়া তাঁকে আটক করলেও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য দেয়নি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
দুই কোরিয়ার মধ্যবর্তী নিরপেক্ষ অঞ্চলে সামরিক নিরাপত্তা দেওয়া জাতিসংঘ কমান্ড বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। জাতিসংঘ কমান্ড জানিয়েছে, ট্র্যাভিস কিং নামে আটক ওই ব্যক্তি দক্ষিণ ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যকার সামরিক সীমান্তরেখার (মিলিটারি ডিমারকেশন লাইন) কাছাকাছি বেড়াতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ভুল করে অনুমতি না নিয়ে উত্তর কোরিয়ায় ঢুকে পড়লে তাঁকে আটক করে উত্তর কোরীয় বাহিনী।
টুইটারে শেয়ার করা এক পোস্টে জাতিসংঘ কমান্ড বলেছেন, একজন মার্কিন নাগরিক যৌথ নিরাপত্তা এলাকায় অবস্থিত সামরিক সীমান্তরেখা (মিলিটারি ডিমারকেশন লাইন) অতিক্রম করে ডেমোক্রেটিক পিপলস রিপাবলিক অব কোরিয়ায় (ডিপিআরকে) প্রবেশ করায় তাঁকে আটক করা হয়।
১৯৫০ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত চলা কোরীয় যুদ্ধের পর দুই কোরিয়ার সীমারেখায় মিলিটারি ডিমারকেশন জোন চালু করা হয় এবং সেখানে জাতিসংঘের নিয়ন্ত্রণে একটি বহুজাতিক বাহিনী পাঠানো হয়—যা জাতিসংঘ কমান্ড নামে পরিচিত।
উত্তর কোরিয়ার জন্মলগ্ন থেকেই প্রায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নেতিবাচক সম্পর্ক বিরাজ করছে। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট দেশটির নাগরিকদের জন্য উত্তর কোরিয়ায় ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছে। তারপরও দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর একজন সদস্য কীভাবে উত্তর কোরিয়ায় ঢুকে পড়লেন—তা-ই একটি বিরাট প্রশ্ন।
এদিকে, ট্র্যাভিস কিংকে আটক করার বিষয়ে উত্তর কোরিয়ার তরফ থেকে কোনো মন্তব্যই এখন পর্যন্ত করা হয়নি। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমগুলোতে বিষয়টি নিয়ে পিনপতন নীরবতা বিরাজ করছে।
অপর দিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন মঙ্গলবার জানিয়েছেন, ট্র্যাভিস কিং যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর একজন সদস্য এবং তিনি ইচ্ছাকৃতভাবেই উত্তর কোরিয়ায় প্রবেশ করেছেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে লয়েড অস্টিন বলেন, ‘এখনো এ বিষয়টির প্রাথমিক পর্যায়ের রয়েছি এবং এখনো আমরা ব্যাপারটি নিয়ে বেশ কিছু বিষয় জানা চেষ্টা করছি। প্রাথমিকভাবে আমরা যা জানি তা হলো, সে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর একজন সদস্য। সে ইচ্ছাকৃতভাবে এবং অনুমোদন ছাড়াই উত্তর কোরিয়ার সামরিক সীমারেখা অতিক্রম করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং তদন্ত করছি। আমরা বিষয়টি তার (ট্র্যাভিসের) নিকটাত্মীয়দের অবহিত করার জন্য কাজ করছি।’