আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় খোস্ট প্রদেশের বাসিন্দা আকিল নাজির। তাঁর দাবি, তিনি ১৮৮০-র দশকে জন্মগ্রহণ করেছেন। সে হিসাব অনুযায়ী, তাঁর বয়স এখন ১৪০ বছর। যদিও তাঁর এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই। তবে এটি সত্য হলে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বয়সী মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন তিনি। এজন্য আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার তাঁর বয়স যাচাইয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
দ্য টেলিগ্রাফে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, আকিল নাজিরের দাবি, ১৯১৯ সালের তৃতীয় ইংল্যান্ড—আফগান যুদ্ধের সময় তাঁর বয়স ত্রিশের কোঠায় ছিলেন। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করা আফগান নেতা কিং আমানুল্লাহ খানের সঙ্গে যুদ্ধের সমাপ্তি উদযাপন করেছিলেন।
নাজির বলেন, ‘আমি কিং আমানুল্লাহ খানের সঙ্গে প্রাসাদে ছিলাম। তখন আমার বয়স ত্রিশের উপরে। আমার মনে আছে, আমি বলেছিলাম যে ব্রিটিশরা পালিয়েছে। সবাই খুশি ছিল। ব্রিটিশদের তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য কিং আমানুল্লাহ খানকে ধন্যবাদ জানাচ্ছিল। অনেক নেতারা আমাদের সাথে আর্গ (প্রেসিডেন্টের বাসভবন) গিয়েছিলেন। এখন তাদের কেউ বেঁচে নেই।’
বেশ কয়েক প্রজন্মের বহু সদস্য বিশিষ্ট এক পরিবার নাজিরের। পরিবারের সদস্যদেরও দাবি, নাজির পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বয়সী ব্যক্তি। তাঁর এক নাতি খায়াল ওয়াজির বলেন, ‘আমি ৫০ বছর বয়সী। তিনি আমার দাদা। আমার নিজেরও নাতি-নাতনি আছে।’
আকিল নাজিরের দাবির প্রতিক্রিয়া জানিয়ে, খোস্ট প্রদেশের তালেবান মুখপাত্র মুসতাগফর গুরবাজ বলেন, তাঁর (নাজিরের) বয়স যাচাই করার জন্য একটি বিশেষ সিভিল রেজিস্ট্রেশন দলকে কাজে লাগানো হয়েছে। যদি দলিল বা মূল্যায়নের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়, তাহলে আমরা তাঁকে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বয়সী ব্যক্তি হিসেবে নিবন্ধিত করার জন্য কাজ করব।’
বয়স যাচাইয়ের পর যদি দেখা যায়, নাজিরের বয়স সত্যিই ১৪০ বছর, তাহলে তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি দিন বেঁচে থাকা ব্যক্তির খেতাব অর্জন করবেন। এই রেকর্ডটি বর্তমানে জেইন কালমেন্টের ঝুলিতে। ১৮৭৫ সালে জন্ম নেওয়া কালমেন্ট ১৯৯৭ সালে ১২২ বছর বয়সে মারা যান।
পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বয়সী জীবিত ব্যক্তি হিসেবে দাবি এই প্রথমবার নয়। গত জানুয়ারিতে, ব্রাজিলের রিও ডি জানেইরো রাজ্যের একটি গ্রেট-গ্র্যান্ডমা ডিওলিরা গ্লিসেরিয়া পেদ্রো দা সিলভা নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত ব্যক্তি হওয়ার দাবি করেছিলেন। তিনি দাবি করেন, তাঁর ১২০ তম জন্মদিন উদযাপন করতে কয়েক মাস বাকি আছে। তিনি ১৯০৫ সালের ১০ মার্চ, রিওর একটি ছোট গ্রাম পোরসিয়াঙ্কুলাতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলে দাবি করেন।
তবে গিনেস কর্তৃপক্ষ পেদ্রো দা সিলভার আবেদন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি। একটি বিবৃতিতে তাঁরা জানায়, বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত ব্যক্তি হওয়ার দাবি করে অনেক আবেদন আসে।