অনলাইন ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সোমবার শপথ গ্রহণ করেন। আর তাঁর অভিষেক অনুষ্ঠানের ঘণ্টাখানেক পর ভিডিও আলাপনে যুক্ত হন চীন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টদ্বয়। আলাপনে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পরস্পরকে ‘প্রিয় বন্ধু’ বলে উল্লেখ করে নানা বিষয়ে আলোচনা করেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গতকাল মঙ্গলবার ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নেওয়ার ঘণ্টাখানেক পর এক ভিডিও কলে যুক্ত হন। এ সময় দুই নেতা একে অপরকে ‘প্রিয় বন্ধু’ বলে সম্বোধন করেন। চীন ও রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, তাঁরা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ‘উচ্চতর স্তরে’ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
পুতিন বলেন, ‘রাশিয়া এবং চীন বন্ধুত্ব, পারস্পরিক বিশ্বাস এবং সহযোগিতার ভিত্তিতে সম্পর্ক গড়ে তুলছে এবং তারা বাইরের চাপ সত্ত্বেও এই সম্পর্ক মজবুত করতে কাজ করছে।’ সি পুতিনকে বলেন, ‘আমরা কৌশলগত সমন্বয় গভীর করতে, পারস্পরিক সমর্থন শক্তিশালী করতে এবং বৈধ স্বার্থ রক্ষায় একযোগে কাজ করতে হবে।’
এদিকে, ট্রাম্প মঙ্গলবার বেইজিংয়ের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দেন এবং চীনকে ‘দুষ্ট’ বলে অভিহিত করে বলেন, ‘মস্কোর জন্য বড় বিপদ আসবে, যদি তারা ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে কোনো চুক্তি না করে।’ এর প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ সাংবাদিকদের জানান, পুতিন সিকে বলেছেন, ইউক্রেন সংকটের কোনো সমাধানে ‘রাশিয়ার স্বার্থকে সম্মান’ করতে হবে।
পশ্চিমা বিশ্বের অভিযোগ, রাশিয়ার যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী করছে বেইজিং। কারণ, বেইজিং ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ পরিচালনার জন্য মস্কোকে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সরবরাহ করছে। ২০২৩ সালে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ২৪০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়, যা ২০২১ সালের তুলনায় ৬৪ শতাংশ বেশি।
উশাকভ বলেছেন, ‘পুতিন এবং সি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নত করতে প্রস্তুত। যদি ট্রাম্প প্রশাসন আগ্রহ দেখায়, তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও পারস্পরিক লাভজনক এবং শ্রদ্ধাশীল ভিত্তিতে সম্পর্ক গড়ে তোলা হবে।’ তিনি আরও বলেছেন, তবে এই কলের সঙ্গে ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের কোনো সম্পর্ক নেই।
প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলা ভিডিও কলে পুতিন ও সি মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাইওয়ানের পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছেন উশাকভ। চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, সি পুতিনকে বলেছেন, ‘বাইরের অনিশ্চিত পরিস্থিতি মোকাবিলায়’ চীন রাশিয়ার সঙ্গে একযোগে কাজ করতে প্রস্তুত। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য তারা দেয়নি।
এর আগে, গত সপ্তাহে সি ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে যুক্ত হন। এরপর ট্রাম্প এই ফোনালাপকে ‘দুই দেশের জন্য খুব ভালো আলোচনা’ বলে আখ্যা দেন। তাঁরা বাণিজ্য, ফেন্টানাইল মাদক এবং টিকটকসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা বলেন। পুতিন ট্রাম্পের সঙ্গে এখনো কথা বলেননি, তবে তিনি ট্রাম্পের শপথ নেওয়ার কিছু সময় আগে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে তাঁকে অভিনন্দন জানান।