অনলাইন ডেস্ক
সাতজনই ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের হোশিয়ারপুর এলাকার বাসিন্দা। সম্প্রতি তাঁরা সাহায্যের জন্য ভারত সরকারের কাছে আবেদন করেছেন এবং দাবি করেছেন, রাশিয়ায় ঘুরতে যাওয়ার পর তাঁদের প্রতারিত করে ইউক্রেনের সম্মুখযুদ্ধে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বাধ্য হয়ে তাঁরা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন।
এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১০৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে ওই সাত ভারতীয় যুবক নিজেদের অবস্থার কথা বর্ণনা করেছেন। সামরিক বেশে থাকা ওই যুবকেরা একটি এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে ভিডিও পোস্ট করেছেন।
ভিডিওতে দেখা গেছে, যুবকেরা একটি নোংরা ঘরের ভেতর দাঁড়িয়ে আছেন। ঘরটির একটি জানালা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। তাঁদের মধ্য থেকে গগনদীপ সিং নামের একজন ভিডিও বার্তাটি রেকর্ড করে নিজেদের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করছেন এবং সাহায্যের জন্য অনুরোধ করছেন।
গগনদীপ জানান, তাঁরা গত ২৭ ডিসেম্বর রাশিয়ার উদ্দেশে রওনা হন। মূলত সেখানে নববর্ষ উদ্যাপন করাই ছিল তাঁদের লক্ষ্য। তাঁদের কাছে ৯০ দিন মেয়াদি রুশ ভ্রমণ ভিসা ছিল। কিন্তু রাশিয়ায় পৌঁছানোর পর তাঁরা বেলারুশেও গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়েই ঘটে বিপত্তি।
গগনদীপ বলেন, ‘এখানকার একজন এজেন্ট আমাদের বেলারুশে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। আমরা জানতাম না যে, এ জন্য একটি ভিসার প্রয়োজন। বেলারুশে যাওয়ার পর ওই এজেন্ট আমাদের কাছে আরও অর্থ দাবি করেন এবং একপর্যায়ে আমাদের ফেলে রেখে যান। পরে পুলিশ আমাদের ধরে রুশ কর্তৃপক্ষের কাছে নিয়ে যায়। তারা আমাদের একটি নথিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেছে।’
গগনদীপ আরও বলেন, ‘এখন তারা (রুশ কর্তৃপক্ষ) ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আমাদের বাধ্য করছে।’
এ অবস্থায় গগনদীপ সিংয়ের পরিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হাজির হয়েছে। তাঁর ভাই অমৃত সিং এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, বেলারুশে যে নথিতে তাঁরা স্বাক্ষর করেছিলেন, তা রুশ ভাষায় হওয়ায় তাঁরা না বুঝেই স্বাক্ষর করেছিলেন। এর ফলে তাঁরা সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য হন। নথিতে উল্লেখ আছে, তাঁরা হয় ১০ বছরের জন্য কারাগারে থাকবেন নয়তো রুশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেবেন।
এ অবস্থায় ভারতীয় ওই সাত যুবককে মাত্র ১৫ দিনের একটি সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ইউক্রেনের যুদ্ধে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলেও জানান অমৃত।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মাসে ভারত সরকার জানিয়েছিল, রুশ–ইউক্রেন যুদ্ধে কয়েক ডজন ভারতীয় আটকে আছেন। তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য মস্কোর সঙ্গে আলোচনা চলছে।