অনলাইন ডেস্ক
ভারতের উড়োজাহাজ সংস্থা ও বিমানবন্দরগুলো চলতি বছরের ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত ৯৯৯টি বোমা হামলার হুমকি পেয়েছে। এর সবগুলোই ছিল ভুয়া।
ভারতের পার্লামেন্টে এ তথ্য জানিয়েছেন, দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মুরলিধর মোহোল। তিনি বলেছেন, এটি ২০২৩ সালের হুমকির সংখ্যার প্রায় ১০ গুণ।
উপমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য মতে, শুধু অক্টোবরের শেষ দুই সপ্তাহেই ৫০০ টির বেশি হুমকি পেয়েছে ভারতীয় উড়োজাহাজ শিল্প।
ভুয়া হুমকির এই নাটকীয় বৃদ্ধি ফ্লাইট সূচিতে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে। পরিষেবায় ব্যাপক ব্যাঘাত ঘটিয়েছে।
মন্ত্রী বলেছেন, সাম্প্রতিক সব হুমকিই ছিল ভুয়া। ভারতের কোনো বিমানবন্দর বা উড়োজাহাজে কোনো বাস্তব হুমকি পাওয়া যায়নি।
এই হুমকিগুলো সম্পর্কিত ২৫৬টি অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। জড়িত সন্দেহে ১২ জনকে আটক করা হয়েছে।
২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে কর্তৃপক্ষ বোমা হামলার মাত্র ১২০টি ভুয়া হুমকি রেকর্ড করেছিল। এর প্রায় অর্ধেক দিল্লি ও মুম্বাইয়ে দেশের বৃহত্তম বিমানবন্দরগুলোকে লক্ষ্য করে দেওয়া হয়েছিল।
এগত অক্টোবরে একের পর এক ভুয়া হুমকিতে বারবার বহু ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে। কিছু ফ্লাইট পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ।
অন্য দেশে গমনরত ফ্লাইটগুলোতে ভুয়া হুমকি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতেও প্রভাব ফেলেছে।
গত অক্টোবরে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস বিমানে বোমা হামলার হুমকির পরে সিঙ্গাপুরের বিমান বাহিনী দুটি ফাইটার জেট দিয়ে প্রহরা দিয়ে নিয়ে যায়।
একই মাসে, এয়ার ইন্ডিয়ার আরেকটি ফ্লাইট, যেটি দিল্লি থেকে শিকাগো যাচ্ছিল, সেটি কানাডার একটি দূরবর্তী বিমানবন্দরে অবতরণ করতে বাধ্য হয়। ফ্লাইটের যাত্রীদের পরে কানাডা কর্তৃপক্ষ বিমান বাহিনীর উড়োজাহাজে করে শিকাগো পৌঁছে দেয়।
ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় ওই সময় জানিয়েছিল, তারা বিমান চলাচল সুরক্ষিত করতে ‘সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ’ নিচ্ছে। ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে একটি বোমা হামলার হুমকি মূল্যায়ন কমিটি রয়েছে। তারা হুমকির গুরুত্ব মূল্যায়ন করে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।
হুমকির ক্ষেত্রে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল, স্নিফার কুকুর, অ্যাম্বুলেন্স, পুলিশ ও চিকিৎসকদেরও এবার সম্পৃক্ত করা হয়।
এ ছাড়া যাত্রীদের নামিয়ে আনা, তাঁদের কেবিন ব্যাগেজ, চেক–ইন ব্যাগেজ এবং কার্গোসহ আবার স্ক্রিনিং করা হয়। ইঞ্জিনিয়ারিং ও নিরাপত্তা দলগুলোও উড়োজাহাজ পরীক্ষা করে, এরপরে এটি উড্ডয়নের অনুমতি দেওয়া হয়।
এসব কারণেই চলতি বছর বারবার ফ্লাইট বিলম্ব হয়েছে। এতে বিমান সংস্থা ও নিরাপত্তা সংস্থার হাজার হাজার ডলার ক্ষতির হয়েছে।
গত বছর ভারতে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে ১৫ কোটির বেশি যাত্রী ভ্রমণ করেছে বলে জানিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়। ভারতে ১৫০–এর বেশি কার্যকর বিমানবন্দরে প্রতিদিন ৩ হাজারের বেশি ফ্লাইট অবতরণ ও উড্ডয়ন করে। এর মধ্যে ৩৩টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।