অনলাইন ডেস্ক
ভারতের ওডিশা রাজ্যের বিশাখাপত্তম থেকে প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে প্রথম ভারতীয় নারী ট্রাকচালক হিসেবে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন অন্নপুরানি রাজকুমার। তিনি ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের বাসিন্দা। এই যাত্রার মধ্য দিয়ে অন্নপুরানি এক ইতিহাস গড়েছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, তামিল নাড়ুর বাসিন্দা অন্নপুরানি রাজকুমারের বয়স ৪০। এই নারী ট্রাকচালক বিশাখাপত্তম থেকে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোল স্থল বন্দরে এস পৌঁছান। পরে তিনি ট্রাক নিয়ে বাংলাদেশেও প্রবেশ করেন।
দীর্ঘ এই পথ পাড়ি দিতে অন্নপুরানির সময় লেগেছে প্রায় ১০ দিন। মূলত তিনি তাঁর ট্রাকে করে তুলার সুতা নিয়ে গত ২০ এপ্রিল বাংলাদেশ সীমান্তে পৌঁছান তিনি। পরদিন রোববার প্রথম ভারতীয় নারী ট্রাকচালক হিসেবে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন অন্নপুরানি।
অন্নপুরানি এই দীর্ঘপথে মুখোমুখি হন অনেক চ্যালেঞ্জের। তামিল ছাড়া অন্য কোনো ভাষায় কথা বলতে পারেন না তিনি। তাঁর সহকারী কিছুটা হিন্দি জানেন। তাঁর সহায়তা নিয়ে যোগাযোগের কাজটা চালিয়েছেন অন্নপুরানি।
পেট্রাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের (এলপিএআই) ব্যবস্থাপক কমলেশ সাইনি বলেন, ‘অন্নপুরানিকে ভারতের জাতীয় মহাসড়কে গাড়ি চালানোর সময় প্রচুর সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। প্রথমত, নারীদের জন্য কোনো বিশ্রামাগার ছিল না। তবে অন্নপুরানির ভাগ্যটা ছিল সুপ্রসন্ন। তিনি যে হোটেলে বিশ্রাম নিয়েছেন, সেখানে তার ট্রাকটি রাখারও সুযোগ করে দেওয়া হয়েছিল।’
সীমান্তের বিষয়ে সাইনি বলেন, ‘অন্নপুরানিকে নারীদের এলপিএআই নিয়ম অনুসরণ করে সীমান্ত অতিক্রম করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া ট্রাক থেকে তুলা দ্রুত খালাসের জন্য বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছিল। অন্নপুরানির ট্রাক থেকে মাল দ্রুত খালাস করা হয়েছে।’
পেট্রাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘সম্প্রতি দিল্লি থেকে পেট্রাপোলে এমএইচএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসেছিলেন। পেট্রাপোলকে এখনো একটি পুরুষতান্ত্রিক এলাকা হিসেবে দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তাঁরা।’
কার্তিক আরও বলেন, ‘এলপিএআইয়ের সদস্য (অর্থ) রেখা রাইকার কুমার ১৯ মার্চ পেট্রাপোলে একটি সভা করেছিলেন এবং আমাদের নারী শ্রমিকদের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরির জন্য বলেছিলেন। আমরা নারীদের সীমান্তে কাজ করতে উৎসাহিত করার পরিকল্পনা করছি।’