হোম > বিশ্ব > ভারত

যৌন নির্যাতনে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল যেভাবে হয়ে উঠলেন ভোলে বাবা

অনলাইন ডেস্ক

উত্তর প্রদেশের হাতরাশে একটি আশ্রমে পদদলিত হয়ে ১২১ জন মারা যাওয়ার ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত স্বঘোষিত ধর্মগুরু ‘ভোলে বাবা’ বা নারায়ণ সকার হরি ওরফে সুরাজ পাল। তাঁর বিরুদ্ধে পাঁচটি যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ আছে। যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ মাথায় নিয়েও সময়ের পরিক্রমায় সুরাজ পাল পুলিশ কনস্টেবল থেকে হয়েছে উঠেছেন ধর্মগুরু। 

উত্তর প্রদেশ পুলিশ জানিয়েছে ‘ভোলে বাবা’ নামে পরিচিত নারায়ণ সকার হরির আসল নাম সুরাজ পাল যাতব। রাজ্যের কাশগঞ্জ জেলার বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা সুরাজ পাল পুলিশের কনস্টেবল ছিলেন। চাকরি জীবনের শুরুর দিকে বেশ কয়েক বছর পুলিশের স্থানীয় গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করেছেন তিনি। কর্মজীবনে প্রায় ১৮টি থানায় দায়িত্ব পালন করেছেন এই তথাকথিত ধর্মগুরু। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস নাউয়ের প্রতিবেদন অনুসারে প্রায় ২৮ বছর আগে ইভ টিজিংয়ের অভিযোগ দায়ের হয় সুরাজ পালের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগে প্রথমে সাসপেন্ড করা হয় তাঁকে, পরে বরখাস্ত হন তিনি। সুরাজ পালের জন্ম শহর ইটাওয়ার সিনিয়র পুলিশ সুপার সঞ্জয় কুমার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছেন, ওই ইভ টিজিংয়ের ঘটনায় বেশ লম্বা সময় জেলে ছিলেন সুরজ পাল। কারাগার থেকে বেরিয়েই তিনি ‘বাবার’ রূপ ধরেন। 

অবশ্য এই অভিযোগসহ সব মিলিয়ে পাঁচটি যৌন নির্যাতনের অভিযোগে মামলা হয় সুরাজ পালের বিরুদ্ধে। এসব মামলা দায়ের করা হয়েছিল—আগ্রা, ইটাওয়া, কাশগঞ্জ, ফারুখাবাদ ও দুসায়। 

বরখাস্ত হওয়ার পরে সুরাজ পাল আদালতে দ্বারস্থ হন নিজের চাকরি ফিরে পেতে। আদালত চাকরি ফিরিয়েও দিয়েছিলেন। কিন্তু ২০০২ সালে আগ্রায় কর্মরত থাকাকালে স্বেচ্ছায় অবসর নেন। এরপর ফিরে যান নিজ গ্রামে। কিছুদিন পরে তিনি দাবি করতে থাকেন, ঈশ্বরের সঙ্গে সরাসরি কথা হয় তাঁর। এই সময় থেকেই নিজেকে ‘ভোলে বাবা’ হিসেবে তুলে ধরতে থাকেন সুরাজ পাল। 

কয়েক বছরের মধ্যেই ‘ভোলে বাবার’ ভক্ত সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে ওঠে। এই ভক্তকুলই তাঁর হয়ে বড় বড় ধর্মীয় সমাবেশের আয়োজন করতে থাকে। সেসব জমায়েতে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হতে শুরু করেন। এ বিষয়ে সিনিয়র পুলিশ সুপার সঞ্জয় কুমার বলেন, ‘৭৫ বছর বয়সী সুরজপাল ওরফে ভোলে বাবারা তিন ভাই। তিনিই সবার বড়।’ 

নিজের ধর্মীয় সমাবেশ বা ‘সৎসঙ্গ’–এ ভোলে বাবা একাধিকবার দাবি করেছেন, সরকারি চাকরি থেকে কে তাঁকে এদিকে টেনে আনল তা তিনি নিজেও জানেন না। 

এ ধরনের স্বঘোষিত ধর্মগুরুদের বেশির ভাগকেই দেখা যায় ভক্তদের কাছ থেকে বিপুল ধনসম্পত্তি ‘দান’ হিসেবে গ্রহণ করতে। তবে আশ্চর্যজনকভাবে ভোলে বাবা ওরফে নারায়ণ সকার ভক্তদের কাছ থেকে কোনো দান-দক্ষিণা গ্রহণ করেন না। যদিও বেশ কয়েকটি আশ্রম তৈরি করেছে তাঁর চ্যারিটেবল ট্রাস্ট। 

অন্য হিন্দুধর্ম গুরুদের মতো ভোলে বাবা গেরুয়া পরেন না। সব সময়ই তাঁর পরিধানে থাকে সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবি বা জামা-প্যান্ট অথবা স্যুট। ভোলে বাবার সৎসঙ্গে যারা আসে, তাদের বেশির ভাগই অর্থনৈতিকভাবে দরিদ্র শ্রেণির ও অনগ্রসর গোষ্ঠীর মানুষ। 

স্থানীয় সাংবাদিকদের মতে, ভোলে বাবা গত কয়েক বছরে হাতরাশে বহুবার সৎসঙ্গ করেছেন এবং প্রতিবারই আগেরবারের থেকে বেশি ভিড় হয়েছে। স্থানীয় সাংবাদিক বি এন শর্মা বলেন, ‘বাবার সৎসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে ঢুকতে দেওয়া হয় না, ভিডিও করাও নিষিদ্ধ। তাঁর নিরাপত্তায় সৎসঙ্গীদের একটি বড় দল থাকে, যারা তাঁকে ঘিরে রাখে। তাই ভোলে বাবার কাছাকাছি পৌঁছানো বেশ কঠিন।’ 

বিপুলসংখ্যক ভক্ত থাকলেও সামাজিকমাধ্যমে ভোলে বাবার উপস্থিতি খুব একটা বেশি দেখা যায় না। তাঁর ভক্তদেরও সে রকম উপস্থিতি নেই সামাজিকমাধ্যমে। বাস্তবে লাখ লাখ ভক্ত থাকলেও ফেসবুকে তাঁর সৎসঙ্গগুলোর ‘লাইভ’ প্রায় নেই বললেই চলে। যেসব সৎসঙ্গ আয়োজন করেন তাঁর ভক্তরা, সেগুলোর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকে স্বেচ্ছাসেবকেরাই।

তথ্যসূত্র: বিবিসি ও টাইমস নাউ

যে যুক্তিতে পরীক্ষা কেন্দ্রে বোরকা নিষিদ্ধের দাবি বিজেপি নেতার

কুম্ভ মেলায় পদদলিত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩০, প্রকৃত সংখ্যাটি এখনো ‘অনিশ্চিত’

ভারতে মহাকুম্ভ মেলায় অমৃত স্নানে পদদলিত হয়ে মৃত ১৫

দিল্লিতে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গারা বসতি গড়েছে: যোগী আদিত্যনাথ

দিল্লিকে বাংলাদেশি-রোহিঙ্গা মুক্ত করবে বিজেপি: অমিত শাহ

সনাতন ধর্মই ভারতের জাতীয় ধর্ম: যোগী আদিত্য নাথ

সাইফের ওপর হামলা: গ্রেপ্তার বাংলাদেশি সাজ্জাদের ফিঙ্গারপ্রিন্টের সঙ্গে নমুনা মেলেনি

ভারতের বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা

বাঁধের লড়াইয়ে চীন-ভারত, হুমকিতে আদিবাসীরা

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক অন্য দেশের ওপর নির্ভর করে না: পাকিস্তান প্রসঙ্গে ভারত

সেকশন