করোনায় বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকার শুরুর দিকেই রয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। করোনা আক্রান্তের দিক থেকে বিশ্বে তৃতীয় ও করোনায় মৃত্যুর দিক থেকে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে লাতিন আমেরিকার এ দেশটি। দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৯৭ লাখ ৭ হাজার ৬৬২ এবং মৃত্যু হয়েছে ৫ লাখ ৫০ হাজার ৫৮৬ জনের।
উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, দেশটিতে করোনায় গর্ভবতী নারীদের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটিতে চলতি বছরেই ১ হাজারের বেশি গর্ভবতী নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালের নবজাতক ইউনিটে অপরিপক্ব ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর সংখ্যা বাড়ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মারা যাওয়া প্রতি পাঁচজন নারীর একজনের ভাগ্যে আইসিইউ জোটেনি। আর প্রতি তিনজনের একজন নারী মারা গেছেন ভেন্টিলেটরের অভাবে। আইসিইউতে ভর্তি হয়েও মৃত্যুর হাত থেকে মুক্তি মেলেনি অনেকেরই। আইসিইউতে করোনা আক্রান্ত গর্ভবতী নারীর মৃত্যুর হার ৩৯ শতাংশ।
ব্রাজিলে করোনা আক্রান্ত গর্ভবতী নারীদের চিকিৎসার জন্য আইসিইউ গড়ে তোলা ড. রসানা পালসিনেলি বিবিসিকে বলেন, এ পর্যন্ত ১৮০ জন গর্ভবতী আইসিইউতে চিকিৎসা নিয়েছেন। মৃত্যুর হার ৫ শতাংশ।
তবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ চিকিৎসাবঞ্চিত হচ্ছেন। ব্রাজিলের উত্তর-পূর্ব দিকের এক বাসিন্দা করোনায় তাঁর স্ত্রীকে হারিয়েছেন। গর্ভধারণের ২৭তম সপ্তাহে এসে তাঁর স্ত্রী করোনা শনাক্ত হন। হাসপাতাল দূরে হওয়ায় তাঁকে বাঁচানো যায়নি। তাঁদের যমজ সন্তান এখনো আইসিইউতে ভর্তি রয়েছে।
প্রসঙ্গত, টিকাদানেও পিছিয়ে রয়েছে লাতিন আমেরিকার এ দেশটি। দেশটিতে এ পর্যন্ত মাত্র ৪৫ শতাংশ মানুষ টিকার দুই ডোজের মধ্যে একটি ডোজ গ্রহণ করেছেন। টিকার দুই ডোজ গ্রহণ করেছেন ১৬ শতাংশ মানুষ।
এর আগে চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সচিব রাফায়েল কামারা এক সংবাদ সম্মেলনে নারীদের গর্ভধারণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, নারীরা কিছুদিনের জন্য গর্ভধারণ থেকে বিরত থাকতে পারেন। এর ফলে তাঁরা পরে আরও সহজভাবে সন্তান ধারণ করতে পারবেন।