ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ১৮৯ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। অনেকেই এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। এই ভূমিকম্পে ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা করেছেন হাইতির নতুন প্রধানমন্ত্রী অ্যারিয়েল হেনরি। দেশটির স্থানীয় সময় শনিবার সকালে (১৪ আগস্ট) এই ভূমিকম্প হয়। খবর বিবিসির।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৭.২। এ ঘটনায় দেশটিতে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শক্তিশালী ভূমিকম্পে বাড়ি, গির্জা, হোটেলসহ অনেক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কমপক্ষে ৩০ হাজার মানুষ এবারের ভূমিকম্পে ঘরবাড়ি হারিয়েছেন।
জাতিসংঘ বলেছে, পাঁচ লাখ শিশু আশ্রয়, নিরাপদ পানি এবং খাদ্যের অভাবে রয়েছে।
দেশটির জাতীয় বেসামরিক সুরক্ষা সংস্থার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আহতদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসকেরা। হাসপাতালে ঠাঁই নেই। বাধ্য হয়েই গাছের নিচে এমনকি রাস্তাতেও চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। ভূমিকম্পে ১৩ হাজার ৬৯৪টি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
লেস কেয়াসের বাসিন্দা লেনেত্তি নুয়েল বলেন, পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসার অভাবে মেয়েকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। একই অভিযোগ করেছেন ২৬ বছর বয়সী দুই সন্তানের এক মা।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যারিয়েল হেনরি এক মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। জনগণকে সংহতি দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎসস্থল হাইতির রাজধানী পোর্ট-ও-প্রিন্সের ১৬০ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং মাটির ১০ কিলোমিটার গভীরে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা প্রদেশেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। এরই মধ্যে ওই অঞ্চলে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
হাইতির প্রতিবেশী দেশ কিউবার গুয়ানতানামো শহরের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ‘সবাই ভীষণ ভীত-সন্ত্রস্ত। দীর্ঘদিন এত শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়নি।’
হাইতির প্রধানমন্ত্রী অ্যারিয়েল হেনরি জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে দেশের অনেক অংশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মাসব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করছেন তিনি। ২০১০ সালে হাইতির রাজধানীতে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ওই ভূমিকম্পে প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজারের মতো মানুষ প্রাণ হারায়।