অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি স্থল অভিযান দীর্ঘায়িত হতে পারে কয়েক বছর এমনকি এক যুগ পর্যন্ত। এই অভিযানে লড়াইয়ের তীব্রতা হবে খুবই ভয়াবহ। ইরাক ও আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের নেতৃত্বে দেওয়া সাবেক সমরবিশারদ জেনারেল ডেভিড পেট্রাউস। মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির সাবেক এই পরিচালক বলেন, ইসরায়েল যদি বিমান হামলার সহায়তা নিয়ে গাজায় স্থল অভিযান চালায়, সে ক্ষেত্রে পরিণতি ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। এ সময় তিনি ১৯৯৩ সালে সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসুতে মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার জের টানেন।
সে বছর মোগাদিসুতে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল মার্কিন বাহিনী। সে সময় বিদ্রোহীরা যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার গুলি করে ভূপাতিত করে। কিন্তু লড়াই এত তীব্র ছিল যে হেলিকপ্টার তিনটি থেকে যাঁরা বেঁচে গিয়েছিলেন, তাঁদের উদ্ধার করতে মার্কিন বাহিনীকে যথেষ্ট কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল।
জেনারেল পেট্রাউস আরও বলেন, ‘যদি তারা (হামাস) প্রতিরক্ষায় খুবই সৃষ্টিশীল হয়—যেমনটা তারা ছিল ইসরায়েলে আক্রমণের সময়—তাহলে ইসরায়েলি বাহিনীকে আত্মঘাতী বোমা হামলা, ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস, বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ, বুবি ট্র্যাপ ইত্যাদির মুখোমুখি হতে হবে। এর বাইরে শহুরে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় যুদ্ধের বিপদ তো রয়েছেই।’
হামাস গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দুর্ভেদ্য নিরাপত্তাবলয় ভেঙে হামলা চালায়। সেই হামলায় অন্তত ১ হাজার ৪০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। সেদিন হামাস ইসরায়েল থেকে ২ শতাধিক ইসরায়েলিকে বন্দী করে আনে। জবাবে ইসরায়েল সেদিন থেকেই গাজায় ব্যাপক বিমান হামলা শুরু করেছে। সেই সব হামলায় গাজায় সাড়ে ৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু।
জেনারেল পেট্রাউস বলেন, ‘এখানে গাজায় যে পরিস্থিতি (যুদ্ধের/পাল্টা আক্রমণের) তৈরি হয়েছে, তার চেয়ে কঠিন পরিস্থিতি কল্পনা করাও কঠিন। আমি এর আগেও বেশ কয়েকটি শহুরে যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি—আপনি যখন পাল্টা আক্রমণ বাঅভিযান চালান, তখন আপনি চাইলে এক বা দুই বছরে সেটি জিততে পারবেন না। সাধারণত এটির লক্ষ্য অর্জনে প্রায় এক যুগ লেগে যেতে পারে, যেমনটা আমি দেখেছি ইরাক ও আফগানিস্তানে।’