ইসরায়েলি কারাগারে বেশ কয়েক দিন বন্দী ছিলেন গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফার পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালমিয়া। সম্প্রতি তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে ইসরায়েল। আর মুক্ত হয়েই ইসরায়েলি কারাগারে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি নির্যাতনের লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, ইসরায়েলি কারাগারে এখনো অনেক ফিলিস্তিন রয়ে গেছেন, যারা নির্যাতনের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
আবু সালমিয়া বলেছেন, ইসরায়েলি কারাগারগুলোতে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি জিজ্ঞাসাবাদের সময় নির্মম নির্যাতনের কারণে মারা গেছেন। এ সময় নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে পড়া এসব ফিলিস্তিনিকে কোনো চিকিৎসাই দেয়নি ইসরায়েলি সেনারা। গত সোমবার কারামুক্ত হওয়ার পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে এসব চিত্র তুলে ধরেন আবু সালমিয়া। তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আল-শিফা হাসপাতালের এই পরিচালক জানিয়েছেন, কারাগারে ইসরায়েলিরা ফিলিস্তিনি বন্দীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করছে। তাদের খুব সামান্য পরিমাণ খাবার দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘গাজা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া বন্দীরা ইসরায়েলি কারাগারে গড়ে ২৫ কেজি করে ওজন হারিয়েছেন স্রেফ খাবার না পাওয়ার কারণে।’
ইসরায়েলি চিকিৎসক ও নার্সরাও এই নির্যাতনের অংশীদার বলে জানিয়েছেন আবু সালমিয়া। তিনি বলেছেন, ইসরায়েলি চিকিৎসক ও নার্সরা অসুস্থ ফিলিস্তিনি বন্দীদের চিকিৎসা সেবা না দেওয়ার মাধ্যমে শাস্তি দিচ্ছে। আবু সালমিয়া বলেন, ‘সেখানে (কারাগারে) ইসরায়েলি চিকিৎসকেরাও (ফিলিস্তিনি) বন্দীদের মারধর করছে, নার্সরাও ফিলিস্তিনি বন্দীদের মারধর করছে।’
এ সময় ফিলিস্তিনি এই চিকিৎসক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানান যেন তাঁরা ইসরায়েলি কারাগারগুলো পরিদর্শন করে এবং সেখানে কি চলছে তার প্রকৃত চিত্র উপলব্ধি করতে পারে।
উল্লেখ্য, গত সোমবারই ইসরায়েল আবু সালমিয়াসহ ৫৪ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয়। যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন চিকিৎসক। এই ৫৪ জনের প্রায় সবাইকেই আল-শিফা হাসপাতাল ও অন্যান্য চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে বিগত কয়েক মাসে আটক করেছিল ইসরায়েল।