মুষলধারে বৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উপসাগরীয় অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশ। মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র দুবাইসহ সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও ওমানে দেখা দিয়েছে বিরল বন্যা। বজ্রপাতসহ ভারী বর্ষণের কারণে গতকাল মঙ্গলবার দুবাইয়ের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এবার ৭৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত সোমবার ভোররাত থেকেই এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সংগৃহীত আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য অনুসারে, ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতে ভিজে ওঠে দুবাইয়ের বালুময় পথঘাট। গতকাল স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে ঝড় তীব্রতর হয়ে ওঠে এবং দিনভর তা অব্যাহত থাকে। বৃষ্টির তীব্রতা এবং শিলাবৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে শহরটি।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুসারে, গতকাল দিনের শেষভাগ পর্যন্ত দুবাইয়ে ১৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। অন্যান্য সময়ে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বছরে গড়ে ৯৪ দশমিক ৭ শতাংশ বৃষ্টিপাত হয়। এ বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিক ভ্রমণের জন্য বিশ্বের ব্যস্ততম এবং দূরপাল্লার ক্যারিয়ার এমিরেটসের জন্য প্রধান এক কেন্দ্র।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিমানবন্দরের ভিডিওতে জলাবদ্ধ রাস্তায় উড়োজাহাজ অবতরণ করতে দেখা যায়। পরে গতকাল রাতে বিমানবন্দরে কার্যক্রম বন্ধ করে রাখা হয়। চারপাশের রাস্তায় বন্যার পানি জমে যাওয়ায় যাত্রীদের টার্মিনালে পৌঁছাতে বেশ বেগ পেতে হয়।
দুবাই মল এবং আমিরাতের মলের মতো শপিং সেন্টারসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলো প্লাবিত হয়েছে এবং দুবাই মেট্রোস্টেশন গোড়ালি পর্যন্ত পানিতে ডুবে গেছে। রাস্তাঘাট ধসে পড়েছে, আবাসিক এলাকাগুলো ডুবে গেছে এবং বিভিন্ন বাড়ির ছাদ, দরজা এবং জানালা দিয়ে ঘরে বৃষ্টির পানির প্রবেশের খবর পাওয়া গেছে।
আরব উপদ্বীপের শুষ্ক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে বৃষ্টিপাত অস্বাভাবিক। তবে শীতের মৌসুমে পর্যায়ক্রমে বৃষ্টি দেখা যায়। নিয়মিত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বেশির ভাগ রাস্তায় পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। এর কারণে বন্যার দেখা দেয়।
প্রতিবেশী দেশ ওমানে বেশ কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টির কারণে ১৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে বন্যায় গাড়িতে ভেসে যাওয়া ১২ জন স্কুল শিক্ষার্থীও ছিল।