অস্ট্রিয়ার দুই নাগরিকসহ তিন ইউরোপীয়কে মুক্তি দিয়েছে ইরান। মুক্তিপ্রাপ্তরা হলেন অস্ট্রিয়ান-ইরানি দ্বৈত নাগরিক কামরান গাদেরি ও মাসুদ মোসাহেব। মুক্তিপ্রাপ্ত ডেনমার্কের আরেক নাগরিকের নাম জানা যায়নি। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্দী বিনিময়ের অংশ হিসেবে তাঁদের মুক্তি দিয়েছে ইরান সরকার।
গোয়েন্দাগিরি ও নিরাপত্তার হুমকির অভিযোগে ইরানে ওই দুই অস্ট্রিয়ার নাগরিককে আটক করায় আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল।
বেলজিয়াম সরকার জানিয়েছে, বন্দিবিনিময়ের অংশ হিসেবে ডেনমার্কের এক নাগরিককেও মুক্তি দিয়েছে ইরান। বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্রো বলেন, স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তিনজনই ওমান হয়ে বেলজিয়ামে ফিরবেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, ব্রাসেলসের ঠিক বাইরে মেলসব্রোক সামরিক বিমানবন্দরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাদজা লাহবিব তাঁদের স্বাগত জানাবেন।
অন্যদিকে অস্ট্রিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার শ্যালেনবার্গ এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, বছরের পর বছর ‘কঠোর কারাবাসের’ পর দুজনেই বাড়িতে ফিরছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘ইরানে এখনো কারাবন্দী তৃতীয় নাগরিকের মুক্তি নিশ্চিত করতে অস্ট্রিয়ার চেষ্টার কমতি হবে না।’
অস্ট্রিয়ার গাদেরিকে ২০১৬ সালে ইরানে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে তাঁকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর মোসাহেবকে ২০১৯ সালে তেহরান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই দুজন যথাক্রমে ২ হাজার ৭০৯ এবং ১ হাজার ৫৮৬ দিন কারাগারে ছিলেন।
এর আগে বন্দী বিনিময় চুক্তির অংশ হিসেবে বেলজিয়ামের মানবাধিকারকর্মী অলিভিয়ের ভ্যানডেকাস্টিল এবং ইরানের কূটনীতিক আসাদুল্লাহ আসাদিকে মুক্তি দেয় দেশ দুটি। বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভ্যানডেকাস্টিল ৪৫৫ দিন ইরানের কারাগারে ছিলেন। গুপ্তচরবৃত্তিসহ কয়েকটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর তাঁকে ৪০ বছরের কারাদণ্ড এবং ৭৪টি বেত্রাঘাতের শাস্তি দেওয়া হয়েছিল।
অন্যদিকে আসাদিকে ২০২১ সালে ফ্রান্সে একটি ব্যর্থ বোমা হামলার পরিকল্পনার দায়ে বেলজিয়ামে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। তাঁকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আসাদিকে ‘অবৈধভাবে আটক’ করা হয়েছিল।
শুক্রবার অস্ট্রিয়ান-ইরানি নাগরিকদের মুক্তির ঘোষণা ওমানের মধ্যস্থতায় বন্দী বিনিময় চুক্তির পর আসে। উপসাগরীয় দেশটি এর আগেও বন্দী বিনিময়ের মধ্যস্থতা করেছিল।