ক্রিপ্টোকারেন্সি মোগল এবং ‘ক্রিপ্টোকারেন্সির রাজা’ নামে পরিচিত ডো কওনকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রত্যর্পণ করেছে বলকান অঞ্চলের দেশ মন্টেনেগ্রো। ডো কওন দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক।
ওয়াশিংটন টাইমস জানিয়েছে, কওনকে প্রত্যর্পণের জন্য অনুরোধ করেছিল দক্ষিণ কোরিয়াও। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করলেও ডিসেম্বরের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধ মঞ্জুর করেছিল মন্টেনেগ্রোর বিচার মন্ত্রণালয়।
মন্টেনেগ্রোর পুলিশ জানিয়েছে, ইন্টারপোলের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর কর্মকর্তারা ডো কওনকে পোডগোরিকা এয়ারপোর্টে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই-এর প্রতিনিধিদের কাছে হস্তান্তর করেন।
পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আজ ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ডো কওনকে যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ ও এফবিআই-এর এজেন্টদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
ডো কওনের এই প্রত্যর্পণ একটি মাসব্যাপী আইনি নাটকের সমাপ্তি ঘটিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশই ডো কওনের প্রত্যর্পণের জন্য আবেদন করেছিল। গত কয়েক মাসে মন্টেনেগ্রোর বিভিন্ন আদালত একাধিকবার কওনকে যুক্তরাষ্ট্র বা তাঁর নিজ দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় পাঠানোর বিষয়ে রায় দিয়েছিল। এসব রায় আবার পরিবর্তনও হয়েছিল।
ডো কওন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার অপর একজনকে ২০২৩ সালের মার্চে মন্টেনেগ্রো থেকে আটক করা হয়। তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই যাওয়ার জন্য কোস্টারিকার ভুয়া পাসপোর্ট ব্যবহার করছিলেন। এই অভিযোগে পরে মন্টেনেগ্রোতে কারাদণ্ডও ভোগ করেন ডো কওন।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ডো কওনের বিরুদ্ধে টেরা-ফর্ম ল্যাবসের ৪০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ক্রিপটোকারেন্সি ধসের জন্য জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০২২ সালের মে মাসে ডিজিটাল মুদ্রা টেরা এবং লুনার পতনের পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
ডো কওন ছাড়াও টেরা-ফর্ম ল্যাবসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরও পাঁচজনের বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও আর্থিক অপরাধের অভিযোগ ছিল।
জানা গেছে, টেরা-ইউএসডি নামের মুদ্রাটিকে একটি ‘স্থিতিশীল মুদ্রা’ হিসেবে ডিজাইন করা হয়েছিল। যেন এই মুদ্রা ডলারের মতো স্থিতিশীল সম্পদের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে এবং দাম পরিবর্তনের প্রবণতা প্রতিরোধ করে।
তবে ২০২২ সালে টেরা-ইউএসডি তার ১ ডলারের সমমান থেকে অনেক নিচে নেমে গেলে প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলারের বাজারমূল্য হারিয়ে যায়। এর ফলে টেরা-ইউএসডি এবং এর সহগামী মুদ্রা লুনার বিনিয়োগকারীরা ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হন।
ডো কওনের প্রত্যর্পণের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর বিরুদ্ধে চলমান মামলার পরবর্তী ধাপ শুরু হলো।