Ajker Patrika

ওষুধে শুল্ক আরোপে ট্রাম্পের প্রস্তুতি শুরু

  • শুল্ক ঠেকাতে যোগাযোগ করছে বড় প্রতিষ্ঠান।
  • যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা সরিয়ে নিতে পারে অনেক কোম্পানি।
  • এক সপ্তাহের মধ্যে সেমিকন্ডাক্টরের ওপর শুল্ক আরোপ।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

এবার যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আমদানি করা ওষুধ ও সেমিকন্ডাক্টর পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপে তদন্ত শুরু হচ্ছে। বলা হচ্ছে, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে এই শুল্ক আরোপ করা হবে। গত সোমবার দেশটির ফেডারেল রেজিস্ট্রার দপ্তরের এক নোটিশে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা ওষুধে শুল্ক আরোপ করা হবে—এই ইঙ্গিত কদিন আগেই দিয়েছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত সপ্তাহে ন্যাশনাল রিপাবলিকান কংগ্রেসনাল কমিটির নৈশভোজে অংশ নিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ওষুধের ওপর বড় ধরনের শুল্ক আরোপ করা হবে।

ওই নৈশভোজে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা এখন এমন কিছু করতে যাচ্ছি, যা আমাদের করতেই হবে। আমরা ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রীর ওপর শুল্ক আরোপ করতে চলেছি। একবার আমরা এটা করে ফেললে তারা (কোম্পানিগুলো) আমাদের দেশেই ছুটে আসবে।’

ফেডারেল রেজিস্ট্রার দপ্তরের ঘোষণায় জাতীয় নিরাপত্তার কথা বলা হলেও আসলে ওষুধ কোম্পানিগুলো যাতে যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা চালু করে, সেই চেষ্টা চালাচ্ছেন ট্রাম্প। এ জন্য শুল্কের বোঝা চাপিয়ে দেওয়ার পথে হাঁটছেন। তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, আমরা বড় বাজার। তাই শিগগির আমরা ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রীর ওপর বড় ধরনের শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিতে চলেছি।’

এমন বার্তা দেওয়ার পর সোমবার ফেডারেল রেজিস্ট্রার দপ্তর ওষুধ ও সেমিকন্ডাক্টর নিয়ে নতুন শুরুর ঘোষণা দিল। ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, ফেডারেল রেজিস্ট্রার দপ্তরের এই নোটিশের বিপরীতে জনসাধারণ তাদের মতামত দিতে পারবে। এ জন্য ২১ দিন সময় দেওয়া হবে। সাধারণত এই ধরনের তদন্ত শেষ করতে ২৭০ দিন সময় লাগে।

প্রথম লক্ষ্য সেমিকন্ডাক্টর

সেমিকন্ডাক্টর সাধারণত বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি পণ্যের চিপ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। প্রথমবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরই সেমিকন্ডাক্টরের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেই সময় ২৩২ দিন তদন্ত করেছিলেন। এরপর এবার ক্ষমতায় এসে স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম ও অটোমোবাইল শিল্পের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন। ৫ এপ্রিল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক কার্যকরও হয়েছে। তবে সেমিকন্ডাক্টর ও ওষুধের ওপর এখনো শুল্ক আরোপ করা হয়নি। এবার এই দুই ধরনের পণ্যের ওপর আলাদা করে শুল্ক আরোপের চেষ্টায় রয়েছেন তিনি। এ নিয়ে গত রোববার কথা বলেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সেমিকন্ডাক্টরের ওপর শুল্ক ঘোষণা করবেন তিনি। তবে কিছু প্রতিষ্ঠান সেখানে শুল্ক সুবিধা পাবে।

যুক্তরাষ্ট্রে চিপ রপ্তানিকারকদের মধ্যে অন্যতম তাইওয়ান। ট্রাম্পের এমন ঘোষণার পর তাইওয়ানের অর্থমন্ত্রী কুও জি-হুয়েই জানিয়েছেন, তাঁরা এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করতে চাইছে।

রোগীরা ওষুধ পাবে না

এদিকে সেমিকন্ডাক্টর ছাড়াও ওষুধ, ওষুধ তৈরির বিভিন্ন উপাদান এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম নিয়েও তদন্ত শুরু হচ্ছে। তবে ইতিমধ্যে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। তারা বলছে, শুল্ক আরোপ করা হলে ওষুধের সংকট দেখা দিতে পারে এবং অনেক রোগী ওষুধ না পাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তবে ট্রাম্প চাইছেন, আরও কিছু প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধ তৈরি করুক, যাতে দেশটির বিদেশি ওষুধের ওপর নির্ভরশীল হতে না হয়। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ওষুধ তৈরিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা ট্রাম্পের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, যাতে শুল্ক আরোপ না করা হয় এবং প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা সরিয়ে নিতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত