গত মার্চেই যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে চার ঘণ্টার এক অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে রিক স্লেইমানের শরীরে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। তবে দুই মাসের মধ্যে আজ রোববার তাঁর মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেছে স্কাই নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথমবারের মতো শূকরের একটি জেনেটিক্যালি মোডিফাইড কিডনি কোনো জীবিত রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। সার্জনরা সে সময় আশা প্রকাশ করেছিলেন, অঙ্গটি কমপক্ষে দুই বছর স্থায়ী হবে। কিন্তু শনিবার রিকের পরিবার নিশ্চিত করেছে, মাত্র দুই মাসের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তারপরও পরিবারের সদস্যরা সেই সব চিকিৎসককে ধন্যবাদ দিয়েছেন, যাঁরা রিককে নতুন জীবন দিতে চেয়েছিলেন এবং কঠোর পরিশ্রম করেছেন।
এক বিবৃতিতে রিকের পরিবার বলেছে, ‘পশু থেকে মানুষের শরীরে অঙ্গ প্রতিস্থাপন বা জেনোট্রান্সপ্লান্টের ফলে আমরা রিকের সঙ্গে আরও সাত সপ্তাহ বেশি সময় কাটাতে পেরেছি এবং এই সময়ের স্মৃতিগুলো আমাদের হৃদয়ে সব সময় থেকে যাবে।’
এদিকে যেখানে প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়েছিল, সেই ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালের সার্জনরা দাবি করেছেন, প্রতিস্থাপনের ফলেই রিকের মৃত্যু হয়েছে এমন কোনো ইঙ্গিত তাঁদের কাছে নেই।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপনের আগে ২০১৮ সালেও রিকের শরীরে একই হাসপাতালে আরেকটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু ওই কিডনি সক্রিয় হতে ব্যর্থ হলে রিককে আবারও ডায়ালাইসিসে ফিরে যেতে হয়েছিল।
ডায়ালাইসিসের জটিলতা পরে আরও বেড়ে যাওয়ায় রিকের চিকিৎসকেরা তাঁর শরীরে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দিয়েছিলেন। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষায় থাকা রোগীদের কাছে উদাহরণ হতে চেয়েছিলেন রিক। পরিবারটি বলেছে, ‘রিক সেই লক্ষ্য অর্জন করেছে এবং তার আশা এবং আশাবাদ চিরকাল স্থায়ী হবে।’
শূকরের কিডনি ইতিপূর্বে মৃত মস্তিষ্কের মানুষদের মধ্যে অস্থায়ীভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। পাশাপাশি দুজন পুরুষের শরীরে শূকরের হৃৎপিণ্ডও প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু ওই দুজনও দু-এক মাসের মধ্যে মারা গিয়েছিলেন।
এদিকে রিকের প্রতিস্থাপনের এক মাস পর যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সির লিসা পিসানোর শরীরে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে শূকরের একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। ৫৪ বছর বয়সী লিসা এখনো বেঁচে আছেন।
শুধু যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখের বেশি মানুষ অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অপেক্ষায় রয়েছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগেরই কিডনি দরকার।