আদালতের হস্তক্ষেপে হোয়াইট হাউসে প্রবেশাধিকার ফিরে পেল মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস–এপি। গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এপির প্রবেশিকার পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছেন একটি জেলা আদালত।
রায়ে বিচারক ট্রেভর ম্যাকফ্যাডেন বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি গণমাধ্যমের ওপর এমন নিষেধাজ্ঞা মার্কিন সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর পরিপন্থী।
‘গালফ অব আমেরিকা’ নাম নিয়ে মতপার্থক্যের জেরে গত জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে এপির প্রবেশিকার বাতিল করে ট্রাম্প প্রশাসন। জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাহী আদেশে মেক্সিকো উপসাগরের নাম ‘গালফ অব মেক্সিকো’ থেকে পরিবর্তন করে ‘গালফ অব আমেরিকা’ ঘোষণা করেন।
হোয়াইট হাউসের দাবি—এটি যে যুক্তরাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ, এই নামকরণ তারই প্রতীকী স্বীকৃতি। তবে এপি ট্রাম্পের দেওয়া নতুন নাম গ্রহণ না করে উপসাগরটির ঐতিহাসিক নামটিই ব্যবহার করবে বলে ঠিক করে। এরই জবাবে, প্রেসিডেন্টের বাসভবন এবং কার্যালয়ে বার্তা সংস্থাটির কর্মীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এর জেরে গত ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসের তিন কর্মকর্তা—প্রধান কর্মকর্তা সুসান ওয়াইলস, উপপ্রধান কর্মকর্তা টেলর বুডোউইচ ও প্রেসসচিব ক্যারোলিন লেভিটের বিরুদ্ধে মামলা করে এপি।
ট্রেভর ম্যাকফ্যাডেন ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারক। গতকাল মঙ্গলবার রায়ে তিনি আরও বলেন, ‘সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর অধীনে সরকার যদি সাংবাদিকদের জন্য ওভাল অফিস, ইস্ট রুম বা অন্য যেকোনো স্থানের দরজা একবার খোলে, তাহলে তা আর কখনোই বন্ধ করার সুযোগ নেই। প্রশাসনের তাদের কথা পছন্দ না হলেও কিছু করার নেই। মার্কিন সংবিধান এটাই বলে এবং আমরা কেউই সংবিধানের ঊর্ধ্বে নই।’
সরকারের পক্ষ থেকে আপিল করার জন্য আগামী রোববার পর্যন্ত সময় দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবারের রায়ের পর এপির মুখপাত্র লরেন ইস্টন বলেন, ‘আদালতের সিদ্ধান্তে আমরা সন্তুষ্ট। আজকের রায়ে আমরা নিশ্চিত হলাম, যুক্তরাষ্ট্রে সাংবাদিকতা আর মতপ্রকাশের মতো মৌলিক অধিকার চর্চার জন্য সরকারের প্রতিশোধের শিকার হতে হবে না।’
কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির নাইট ফার্স্ট অ্যামেন্ডমেন্ট ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক জামিল জাফর বলেন, ‘এটি যুক্তিসম্মত রায়, এপিকে হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করতে না দেওয়া যে প্রতিশোধমূলক এবং অসাংবিধানিক ছিল তা স্পষ্ট হলো।’