বরগুনার আমতলীতে কনেপক্ষের মাইক্রোবাসসহ ভেঙে পড়া লোহার সেতুটিতে সতর্কীকরণ নোটিশ টাঙানো ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা পবন চৌধুরী। তবে স্থানীয়রা বলছেন, সতর্কীকরণ নোটিশ গাছের মাথায় টাঙানো ছিল, যা চালক বা সাধারণ মানুষের দৃষ্টিগোচর হতো না। এ ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটিতে ভারী যানবাহন চলাচল রোধে কোনো ব্যারিকেড বা দায়িত্বে কেউ নিযুক্ত ছিলেন না।
আজ শনিবার বেলা দেড়টার দিকে আমতলী উপজেলার হলদিয়া এলাকায় কনেপক্ষের মাইক্রোবাস ও অটোগাড়ির ভারে ভেঙে পড়ে লোহার সেতুটি। এতে নিহত হয়েছেন নারী, শিশুসহ নয়জন। তাঁদের মধ্যে সাতজনই মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাসিন্দা। এতে আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের জনসংযোগ কর্মকর্তা পবন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, আজ বেলা দেড়টার দিকে আমতলী উপজেলার হলদিয়া এলাকায় অবস্থিত ৮৫ মিটার দীর্ঘ লোহার সেতুটির উত্তর পাশের দুটি স্প্যান যাত্রীবোঝাই মাইক্রোবাস নিয়ে ধসে পড়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে। এই লোহার সেতুটি ২০০৫-০৬ অর্থবছরে বিএনপির জোট সরকারের আমলে নির্মিত হয়েছিল। সেতুটি হালকা যান (ফুটওভার) প্রকল্পের অর্থায়নে নির্মিত হয়। প্রায় ২০ বছর আগে নির্মিত সেতুটিতে লবণাক্ততার কারণে আয়রন স্ট্রাকচার নষ্ট হয়ে গেছে এবং সেতুর ডেক স্ল্যাবের মধ্যভাগের কিছু অংশের আরসিসি ঢালাই ভেঙে রড বের হয়ে আছে। আয়রন সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় জনসাধারণের চলাচলের জন্য সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড অনেক আগেই টাঙানো হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর স্থলে নতুন গার্ডার সেতু নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্পের ডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ইতিপূর্বে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
পবন চৌধুরীর পাঠানো সেতুতে চলাচলের জন্য সতর্কীকরণ নোটিশ বোর্ডে লেখা ছিল, ঝুঁকিপূর্ণ সেতু, ভারী যানবাহন চলাচল নিষেধ। আদেশক্রমে—নির্বাহী প্রকৌশলী, এলজিইডি, বরগুনা।
আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘যথাযথভাবেই সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড টাঙানো ছিল, কিন্তু মানুষ তা আমলে নেয়নি।’
গাছের সঙ্গে টানানো সাইনবোর্ড মানুষের দৃষ্টিগোচর হতো না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ঠিকমতো সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড টানানো হয়েছে।’
ভারী যানবাহন সেতুতে ওঠা ঠেকাতে কোনো প্রতিরোধক কেন দেওয়া হয়নি জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা একই মন্তব্য করেন।