রোহিঙ্গাদের রাখার জন্য ভাসানচরে সরকার যে ব্যবস্থা করেছে, সেখানেও সহযোগিতা দেবে তুরস্ক। এ ছাড়া সন্ত্রাস দমন ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতাও অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ সফররত তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোলাইমান সয়লুর সঙ্গে আজ শনিবার রাতে সচিবালয়ে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। দুই মন্ত্রীর বৈঠকে সন্ত্রাস দমনে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়।
বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য তাদের (তুরস্ক) আগেও যেমন ভূমিকা ছিল, তারা যেমন শক্ত ভূমিকায় আছেন, আমাদের নিশ্চয়তা দিয়ে গেছেন—রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য তো বটেই, যেসব রোহিঙ্গা আছে তাদের তারা সহযোগিতা করে যাবে। তারা রোহিঙ্গাদের জন্য হাসপাতাল স্থাপন করেছে, বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছে।
বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনার বিষয় সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা বলেছি, তোমরা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শরণার্থী রেখেছ। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিক, প্রধানমন্ত্রী তাদের থাকার জায়গা দিয়েছেন। তারা এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছে এবং এ ব্যাপারে যা করণীয় তারা করবে। এমনকি তারা কালকে (রোববার) ভাসানচরে লোক পাঠিয়ে দেবে। ভাসানচরে তারা কী করতে পারে, সেটি পর্যালোচনা করে সেখানেও তারা সহযোগিতা করবে।
উল্লেখ্য, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ভাসানচরের আশ্রয় শিবিরে স্থানান্তর করছে সরকার। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে ১ হাজার ৬৪৫ জনের প্রথম দলটিকে স্থানান্তরের মাধ্যমে এ প্রক্রিয়া শুরু হয়। সরকারের লক্ষ্য, ১ লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেওয়া।
এ ছাড়া সন্ত্রাস দমন ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে একমত হয়েছে তুরস্ক। এ জন্য তুরস্কের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসার আমাদের সব ডিপার্টমেন্টেই তাঁদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করবেন এবং আমাদের কোনো প্রয়োজন থাকলে সেগুলোও তারা দিয়ে সহযোগিতা করবেন। আমরা প্রশিক্ষণ, গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়, সাইবার অপরাধ দমন এবং আমাদের পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিজিবি, আনসারকে আরও সমৃদ্ধ করার কথা বলেছি। তাঁরা সব কটিতেই একমত হয়েছেন। আনসার ও পুলিশকে তুরস্ক বিভিন্ন পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে, এটা অব্যাহত থাকবে।’
তুরস্কের সঙ্গে একটি এমওইউ সই হয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, এর মূল বিষয় কাউন্টার টেররিজম (সন্ত্রাস দমন), সিকিউরিটি কো-অপারেশন (নিরাপত্তা সহযোগিতা) ও মাদক চোরাচালান রোধ। এই এমওইউয়ের পর তারা তাদের সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করা হবে বলে সোলাইমান সয়লু আমাদের জানিয়েছেন।