বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আগামী ২১ জানুয়ারি বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হবে। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই–এর সঙ্গে এ বৈঠক করতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন আগামী ২০ জানুয়ারি বেইজিং যাবেন।
অন্তর্বর্তী সরকার গত ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেওয়ার পর কোনো দেশের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে এটাই প্রথম আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক।
তৌহিদ হোসেন আজ বুধবার ঢাকায় এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি চীনে যাচ্ছি। আমাকে আমন্ত্রণ করেছে। আমাদের যেসব ইস্যু আছে, সেগুলো নিয়ে আলাপ–আলোচনা করব।’
কী কী ইস্যু আলোচনায় আসতে পারে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি তিনি। তৌহিদ হোসেন বলেন, এ বিষয়ে পররাষ্ট্রসচিব একটি আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক করবেন। সেখানে আলোচনা হবে বাংলাদেশের কী কী অর্জন করার মতো বিষয় আছে। কী কী বিষয়ে তাদের (চীন) কাছ থেকে সমাধান পাওয়া যেতে পারে।
কূটনৈতিক সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা দেশটির অরাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ায় রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি আগের চেয়ে জটিল হয়েছে। রোহিঙ্গাদের ফেরানোর বিষয়ে চীনের সক্রিয় সহযোগিতা চাইবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
সরকারের হিসেবে, মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রায় ১২ লাখ মানুষ দেশটির সেনা কর্তৃপক্ষের নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে কক্সবাজার ও আশপাশের এলাকায় আশ্রয় নেয়।
রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে একটি কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে একটি নিরাপদ পরিবেশ প্রয়োজন। তা না হলে তারা ফিরতে চাইবে না। নতুন বছরে এ বিষয়টিকে একটি কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে মোকাবিলার চেষ্টা করা হবে।
আরাকান আর্মির সঙ্গে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের যোগাযোগ করা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে উপদেষ্টা বিষয়টি এড়িয়ে যান।
কূটনীতিকেরা জানান, রোহিঙ্গা সমস্যার বাইরে বাংলাদেশে অবকাঠামো উন্নয়নে চীনা ঋণে প্রকল্প বাস্তবায়ন, চীনে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়ানো, চীন থেকে শিল্পকারখানার কাঁচামালের সরবরাহ অব্যাহত রাখা ও দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্কের বিভিন্ন দিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের এ বৈঠকের আলোচনায় আসতে পারে।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ২০২২ সালের আগস্টে বাংলাদেশে দ্বিপক্ষীয় সফর করেন।