ঢাকা: করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ২২ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সাত জেলায় লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না আসায় কিছু জেলায় লকডাউনের মেয়াদ এরই মধ্যে বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে আগামী ২৮ জুন সারা দেশে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউনের খবর এসেছে। আজ শনিবার এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করার কথা রয়েছে। গতকাল শুক্রবার লকডাউনের খবর আসার পর থেকেই ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ।
দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ থাকায় পায়ে হেঁটে ছোটখাটো যানবাহনে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন মানুষ। দক্ষিণাঞ্চলের হাজারো যাত্রীর চাপ পড়েছে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া-বাংলাবাজার এবং মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া–দৌলতদিয়া নৌরুটে।
আজ সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় উভমুখী যাত্রীর চাপ থাকলেও বাড়ি ফেরা যাত্রীর সংখ্যা কিছুটা বেশি। ফেরিতে পণ্যবাহী ট্রাক ও জরুরি যানবাহন থেকে যাত্রীর সংখ্যাই বেশি। কাউকে স্বাস্থ্যবিধি কিংবা সামাজিক দূরত্ব মানতে দেখা যায়নি; অনেকের মুখে মাস্কও নেই। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের কয়েকটি পয়েন্টে ও শিমুলিয়া ঘাটের প্রবেশ মুখে পুলিশের বেশ কয়েকটি চেকপোস্ট বসিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরে ফিরছেন আরেক যাত্রী রবিউল। রবিউল বলেন, চলমান লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়তে পারে। এ ছাড়া আগামী সোমবার থেকে যে কঠোর লকডাউন শুরু হবে তা দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে এমন আশঙ্কায় বাড়ি ফিরছেন। এমন আশঙ্কায় বাড়ি ফিরছেন ব্যাংক কর্মকর্তা সালাউদ্দীন, ব্যবসায়ী তপন সাহা, হকার রাজু মিয়ার মতো অনেকেই। সিএনজি অটোরিকশায় যাতায়াতে তাঁদের গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া।
মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ জাকির হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, লকডাউনের নির্দেশনা মানার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। কিন্তু যাত্রীরা বিভিন্নভাবে ঢাকা থেকে ঘাটে আসছেন। আবার বাংলাবাজার ঘাট থেকে আসা যাত্রীরা নানা উপায়ে ঢাকা যাওয়ার চেষ্টা করছেন। অধিকাংশ যাত্রীই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি।
লকডাউনের প্রথম থেকে সীমিত পরিসরে পাঁচটি ফেরি দিয়ে শুধু জরুরি রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ও পণ্যবাহী যানবাহন পারাপারের নির্দেশনা রয়েছে। তবে গতকাল শুক্রবার থেকে ঘাট এলাকায় যাত্রী চাপ বেড়ে যাওয়ায় ১৫টি ফেরি দিয়ে চলছে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার। যাত্রীদের পাশাপাশি ফেরিগুলোতে ব্যক্তিগত গাড়ি ও প্রাইভেট কারের সংখ্যাই বেশি। এসবের সঙ্গে পার হতে দেখা গেছে পণ্যবাহী যানবাহনও।
গতকাল তথ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আগামী সোমবার থেকে পরবর্তী এক সপ্তাহ পর্যন্ত সারাদেশে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে। এ সময় জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব সরকারি–বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। জরুরি পণ্যবাহী ছাড়া সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। তবে গণমাধ্যম লকডাউনের আওতার বাইরে থাকবে।