জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ঝালকাঠি-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, তাঁর মেয়ে ও শ্যালিকার নামে পৃথক তিনটি মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪–দলীয় মহাজোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে ২৬ কোটি ২৭ লাখ ৮১ হাজার ৪৬১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রেখেছেন। এ ছাড়া ১৪টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে তিনি ৩১ কোটি ৪৭ লাখ ৯২ হাজার ৭০৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন উল্লেখ করে তাঁর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়।
আমির হোসেন আমুর মেয়ে সুমাইয়া হোসেনের বিরুদ্ধেও একটি মামলা করেছে দুদক। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বাবার সহযোগিতায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে ৪ কোটি ৪৩ লাখ ৫২ হাজার ৮১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। মামলায় সুমাইয়া হোসেনের নামে ১৮টি ব্যাংক হিসাবে ৪৮ কোটি ৪৯ লাখ ৫৯ হাজার ৬৪২ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করার অভিযোগ আনা হয়।
অন্যদিকে আমির হোসেন আমুর শ্যালিকা সৈয়দা হক মেরীর বিরুদ্ধেও অবৈধভাবে ৭ কোটি ৬৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৭০ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ১৩টি ব্যাংক হিসাবে ৬২ কোটি ৬৮ লাখ ৪১৭ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। মেয়ে ও শ্যালিকার নামে হওয়া পৃথক দুটি মামলায় আমুকেও আসামি করা হয়েছে।
এসব মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪–এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন-১৯৪৭–এর ৫(২) ধারা, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২–এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
গত ৬ নভেম্বর আমির হোসেন আমুকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তাঁকে জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বেশ কিছু মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হওয়া একাধিক মামলাতেও আমুকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৮ আগস্ট আমির হোসেন আমু ও তাঁর পরিবারের সদস্য ও তাঁদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে লেনদেন স্থগিত করার পাশাপাশি তাঁদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।