বাংলাদেশ খাদ্য আমদানিকারক দেশ থেকে রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। আজ বুধবার রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটনে ‘জলবায়ু অভিযোজন: কৃষিভিত্তিক শিল্পোন্নয়নে বাংলাদেশের সুযোগ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করে ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (এফএও), ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স-বাংলাদেশ (আইসিসিবি) এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।
এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ খাদ্য আমদানিকারক দেশ থেকে রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রধান এজেন্ডা কৃষি খাতে উৎপাদন বৃদ্ধি। এশিয়া প্যাসিফিকের ৫২ দেশের মধ্যে বাংলাদেশে কৃষি খাতে উন্নয়নে সামনের সারিতে। আমরা এখন পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাবারের প্রতি গুরুত্বারোপ করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের জনসংখ্যা একটি চ্যালেঞ্জ। তার সঙ্গে রয়েছে পানি সরবরাহ, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কৃষিতে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদন বৃদ্ধি করা হচ্ছে।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষিতে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। বিশেষ করে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় ১৭ শতাংশ উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের দেশের ২৫ শতাংশ এলাকা উপকূলীয়। তার মধ্যে ২ মিলিয়ন হেক্টর জমি লবণাক্ত। এসব জমিতে সাধারণত এক ফসল হয়। আমাদের বিজ্ঞানীরা লবণাক্ত জমিতে উৎপাদন হয়, এমন ফসলের উৎপাদন করা যায় তা নিয়ে গবেষণা করছেন।’
অনুষ্ঠানে আইসিসিবির সভাপতি মাহবুবুর রহমান লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বের ১০টি ফল উৎপাদনকারী দেশের একটি। গত ১৮ বছরে ফল উৎপাদন বেড়েছে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ। গত ৫ বছরে কৃষিপণ্য রপ্তানি বেড়েছে ১৮ শতাংশ। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাংলাদেশের জিডিপির ১-২ শতাংশ ক্ষতি হয়ে থাকে। বিশেষ করে খাদ্যনিরাপত্তায় ক্ষতি হয় ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
এ ছাড়া কৃষি খাতে দেশে ৫২ বছরে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) অবদান কমেছে ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশ। মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশের জিডিপিতে কৃষির অবদান ছিল ৬০ শতাংশ। অথচ ২০২২-২৩ অর্থবছরে এটি এসে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ, অর্থাৎ ৫২ বছরে কমেছে ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশ। অথচ বর্তমানে ৪১ শতাংশ কর্মসংস্থানই কৃষি খাতে বলে এ সভায় তুলে ধরা হয়।
এ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন—পরিবেশ মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, আইসিসিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট এ কে আজাদ, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের করপোরেট, ব্র্যান্ড এবং মার্কেটিং প্রধান বিটোপি দাস চৌধুরী, এসিআই মটরসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এফ এইচ আনসারী, ইন্টারন্যাশনাল মেইজ অ্যান্ড হুইট ইম্প্রুভমেন্ট সেন্টারের কৃষি অর্থনীতিবিদ টি এম আমজাদ বাবু, বেঙ্গল মিট প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ এফ এম আরিফ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাস্টেইনাবল ফাইনান্স ডিপার্টমেন্টর নির্বাহী পরিচালক খরশেদ আলম প্রমুখ।