সেখানে যাঁকে খুশি যেতে দিচ্ছে, যাঁকে খুশি ফেরত পাঠাচ্ছে। এতে দুবাই যেতে ইচ্ছুক অর্ধশতাধিক ব্যক্তি প্রতিদিন ফেরত আসছেন ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে।
জানতে চাইলে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি (ইমিগ্রেশন) এমএ আজিজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভ্রমণ (ভিজিট) ভিসায় গিয়ে সেখান থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মানব পাচার হচ্ছে। এটা বন্ধে দুবাই যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের বহির্গমন ইমিগ্রেশনের জন্য এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
তবে অভিবাসন ও শরণার্থীবিষয়ক বিশ্লেষক এবং আইওএম-এর সাবেক কর্মকর্তা আসিফ মুনীর বলেন, হঠাৎ বহির্গমন ইমিগ্রেশনের কড়াকড়িতে কিছু মানুষ বিপদে পড়বে। তা ছাড়া কে ঘুরতে যাচ্ছে আর কে কাজ করতে যাচ্ছে, তা সব সময় সঠিকভাবে নির্ণয় করা সম্ভব না। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে ইমিগ্রেশন পুলিশের মন-মর্জির ওপর।
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত ৩ লাখ ১৭ হাজার ব্যক্তি দুবাই গেছেন। শেষ ১৮ মাসে ভ্রমণ ভিসায় দুবাই গেছেন ১ লাখ ৯৯ হাজার ৮৬৪ জন নারী ও পুরুষ। তাঁদের মধ্যে ফেরত এসেছেন মাত্র ২১ হাজার ৭৫৪ জন ব্যক্তি। ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও এখনো দেশে ফেরেননি বাকি ১ লাখ ৭৮ জন।
২২ সেপ্টেম্বর জারি করা ইমিগ্রেশন পুলিশের নির্দেশনায় চারটি বিষয় উল্লেখ আছে। প্রথমেই বলা হয়েছে, ভ্রমণ ভিসা নিয়ে কাজের উদ্দেশে যেসব বাংলাদেশি যাত্রী দুবাই যাওয়ার জন্য বহির্গমন টার্মিনালে আসবেন, সেসব যাত্রীর বহির্গমন ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা যাবে না। দুই নম্বরে আছে, শুধু প্রকৃত ভ্রমণকারীদের ক্ষেত্রে ভ্রমণ ভিসা দিয়ে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা হবে। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী, সংসদ সদস্য (এমপি), মন্ত্রী, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও পেশাজীবীদের ক্ষেত্রে ভ্রমণ ভিসা দিয়ে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা যাবে। তিন নম্বরে উল্লেখ করা হয়, যেসব যাত্রী ইতিপূর্বে দুবাইয়ে কাজের
ভিসা বা রেসিডেন্ট পারমিট নিয়ে অবস্থান করছিলেন, ইমিগ্রেশনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে তাঁদের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা যেতে পারে। সবশেষ বলা হয়, যাঁদের বৈধ রেসিডেন্স ভিসা বা কাজের ভিসা (বিএমইটি কার্ড) আছে তাঁদের বহির্গমনের ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকবে না।
অভিবাসন বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই অবস্থায় ইমিগ্রেশন পুলিশের সহযোগিতায় যে দালালেরা প্রতারণা করেন, তাঁদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যেতে পারে।
তবে অতিরিক্ত ডিআইজি (ইমিগ্রেশন) এমএ আজিজ মনে করেন, পুলিশের সহযোগিতায় এমন কাজ করার কোনো সুযোগ থাকবে না। তা ছাড়া নির্দেশনাতেই বলা আছে, কাদের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা হবে।