সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে জারি করা পৃথক রুলের শুনানি শেষ হয়েছে। গতকাল বুধবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হয়। পরে রায়ের তারিখ নির্ধারণের জন্য আজ বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করা হয়।
শুনানি শেষে আইনজীবীরা রায়টি সুপ্রিম কোর্টের শীতকালীন অবকাশের আগে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। এ সময় আদালত বলেন, ‘আমরা এই মামলায় অনেক সময় নিয়েছি, অনেকের বক্তব্য শুনেছি। আমরা এমন একটি রায় দিতে চাই, যেটি নিয়ে ভবিষ্যতে যাতে প্রশ্ন না ওঠে। আমরা চাই ন্যায়বিচার করতে। আমরা বৃহস্পতিবার রায়ের তারিখ জানিয়ে দেব।’
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন চ্যালেঞ্জ করে গত ১৮ আগস্ট সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি রিট করেন। ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে পরদিন রুল জারি করা হয়। ওই রুলে ইন্টারভেনার (আদালতকে সহায়তা করতে) হিসেবে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণফোরামসহ কয়েকজন ব্যক্তি যুক্ত হন। এ ছাড়া নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন পৃথক রিট করেন।
গতকাল মোফাজ্জল হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও এ এস এম শাহরিয়ার কবির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন।
শুনানিতে ফিদা এম কামাল বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনী হচ্ছে আমিত্ব, যা সংবিধানের মূল চেতনার পরিপন্থী। অতীতে চিকিৎসক, স্কলার, শিক্ষক ও আইনজীবীরা সংসদ সদস্য হতেন। এখন ৭০ শতাংশ ব্যবসায়ী। এটি অকল্পনীয়। সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোট বাধ্যতামূলক হলেও পঞ্চদশ সংশোধনীর ক্ষেত্রে তা হয়নি।
এ এস এম শাহরিয়ার কবির শুনানিতে বলেন, ১৯৭৪ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের কোনো উপায় সংবিধানে ছিল না; যে কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। পঞ্চদশ সংশোধনী আনা হয় এক ব্যক্তির শাসন কায়েমের জন্য; যা সংবিধানের মূল চেতনা এবং জনগণের ইচ্ছার পরিপন্থী।