ভোজ্যতেলের দাম নিয়ন্ত্রণে তিনটি প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। আজ সোমবার এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
প্রস্তাব তিনটি হলো বর্তমান যে দাম সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছে, তা পালন করতে হবে, বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে হবে, ভ্যাট তিন মাসের জন্য স্থগিত করতে হবে।
জসিম উদ্দিন আরও বলেন, ‘কেউ দাম বাড়ানোর চেষ্টা করবেন না, অসাধু ব্যবসায়ীদের পক্ষে আমি কখনোই থাকব না। তবে অন্যায়ভাবে কেউ ব্যবসায়ীদের হয়রানি করলে এফবিসিসিআই সব সময় পাশে থাকবে। আমি অসাধু ব্যবসায়ীদের সভাপতি হতে চাই না।’ বাজার তদারকিতে এফবিসিসিআইয়ের মনিটরিং সেল গঠন করার কথা বলেন তিনি।
এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, সারা পৃথিবীতে ১৭টি নিত্যপণ্য সরকার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তবে ভোজ্যতেল বন্ডের মাধ্যমে আমদানি হলে জনগণ সুবিধা লাভ করতে পারবে।
এরপর বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা বলেন, দেশে মাত্র পাঁচটি মিল তেল আমদানি ও পরিশোধন করছে। দাম নিয়ন্ত্রণ করতে হলে এই মুহূর্তে ভ্যাট তুলে দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
মাওলা বলেন, মিলে সরবরাহ সংকট রয়েছে। কোনো কোনো মিল পাঁচ দিন পর্যন্ত ট্রাকের সিরিয়াল দিচ্ছে না। এতে ট্রাকভাড়া বেড়ে যাচ্ছে। পাঁচ দিন বসে থাকার ফলে ১৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে, যা তেলের দামের ওপর পড়ছে।
ভোজ্যতেল পরিবেশনকারী টিকে গ্রুপের সদস্য তসলিম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে ১ হাজার ৩৫০ ডলারের তেল বাজারে সরবরাহ রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে বর্তমানে ১ হাজার ৮৭০ ডলারের ঋণপত্র খোলা হয়েছে।
সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, বাজারে তেলের কৃত্রিম সংকট নেই। প্রতিদিন সিটি গ্রুপের মিল থেকে দুই থেকে আড়াই হাজার টন ভোজ্যতেল সরবরাহ করা হচ্ছে।
টিকে গ্রুপের প্রতিনিধি তসলিম উদ্দিন শাহরিয়ার বলেন, গত বছর আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১ হাজার ১৮০ ডলার। যা বর্তমানে ১ হাজার ৯০০ ডলারে পৌঁছেছে। তবে বাজারে বর্তমানে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৪৬৪ ডলারের তেল সরবরাহ রয়েছে।
ব্যবসায়ীদের বক্তব্য শেষে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খোলা তেল বিক্রি বন্ধ থাকলেও বাংলাদেশে চলমান রয়েছে। খোলা তেলের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার কোনো সুযোগ থাকে না। এ জন্য অনেকেই বোতল কেটে খোলা তেল বিক্রি করছেন। তিনি আসন্ন রমজানে মানুষের দুর্ভোগ যাতে না হয়, সেদিকে নজর রাখার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।
তবে মিল মালিকদের প্রতিনিধিরা বলেন, আগামী কোরবানি ঈদ পর্যন্ত ভোজ্যতেলের দাম বাড়বে না। তবে সরকারকে এ ক্ষেত্রে ভ্যাট প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে দাম নাগালের মধ্যে রাখা সম্ভব হবে না।