নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বৃত্তবন্দী রুটিন জীবনের বাইরে অন্য রকম একটি দিন কাটালেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সব ব্যস্ততাকে ছুটি দিয়ে দীর্ঘদিন পর স্কুল জীবনের সহপাঠীদের সঙ্গে মেতে উঠলেন আনন্দ-উচ্ছ্বাসে, একটু সময়ের জন্য হারিয়ে গেলেন শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলোতে।
স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা স্মরণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে বাল্যবন্ধুদের শোনালেন বিশ্ব কবির কবিতাও। ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা ফখরুলের গ্রামের বাড়িতে আজ বুধবার বন্ধুদের নিয়ে ছিল এই আয়োজন।
সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় হাওলাদার হিমাগার লিমিটেড প্রাঙ্গণে শৈশবের বন্ধুদের আয়োজনে মিলনমেলায় অংশ নেন বিএনপি মহাসচিব।
শৈশবের বন্ধুদের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু কুদ্দুস আমাদের মধ্য থেকে অনেক আগেই চলে গেছে। মনোয়ার চলে গেছে, যার সঙ্গে সারা দিনে একবার দেখা না হলে খারাপ লাগত। অনেকেই আমাদের কাছ থেকে চলে গেছে। যারা এখনো বেঁচে আছি, আমরা একটু বাঁচার মতো বাঁচতে চাই। এই বাঁচাটা হচ্ছে নিজেকে অনুভব করা। আমি আছি, আমি বেঁচে আছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বন্ধুদের মধ্যে অনেকেই অসুস্থ। আজ সকালে বন্ধু আনিসুরকে দেখতে গেছিলাম। একেবারেই শয্যাশায়ী, নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছে। জানি না আমরা কে কখন চলে যাব। কিন্তু যাওয়ার আগে অন্তত আজকের দিনটা আমাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
স্কুলজীবনের স্মৃতি হাতড়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যখন স্কুলে পড়ি খুবই দুষ্টু ছিলাম। বখরান সাহেব ছিলেন আমাদের ক্যাপ্টেন। আমরা দুষ্টুমি করতাম আর ক্যাপ্টেন আমাদের নামে হেড স্যার রোস্তম আলী স্যারকে নালিশ করলেন। তার কিছুদিন পর হেড স্যার আমাদের সবাইকে ডেকে পাঠালেন। ঘরের ভেতরে লাইন করে দাঁড় করালেন এবং সবাইকে একটা করে বেত দিলেন (মারলেন)। আমাদের সেই শৈশব ও স্কুলের জীবন আমি কখনোই ভুলতে পারি না। আমার সব সময় মনে পড়ে, আমার সেই দিনগুলো যদি ফিরে পেতাম।’
স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বাধীনতার পরে বন্ধুদের সঙ্গে রংপুরে এক কাজে গিয়েছিলাম। রাতের বেলা কী করব? তাই ঠিক করলাম সিনেমা দেখব। কিন্তু সিনেমা দেখার জন্য তখন আমাদের হাতে টিকিট ছিল না। তারপরও ভিড় ডিঙিয়ে টিকিটের ব্যবস্থা করে সিনেমা দেখেছি। এগুলো আমার কাছে এখনো মধুর স্মৃতি হয়ে আছে।’
এ সময় কবিতা আবৃত্তির অনুরোধ করা হলে তিনি বলেন, একসময় আবৃত্তি করতাম, এখন করি না। বক্তৃতা করি। তারপরও আমি চেষ্টা করব। কারণ, একসময় আমিও নাটক করেছি, রং মেখেছি, একসময় নাট্যগোষ্ঠী করতাম। পরে তিনি তার প্রিয় কবিতা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’ আবৃত্তি করে শোনান বন্ধুদের।