হোম > রাজনীতি

শৈশবের বন্ধুদের মিলনমেলায় রবীন্দ্রনাথের কবিতা আবৃত্তি করলেন মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২১: ০৮
শৈশবের বন্ধুদের অনুরোধে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা আবৃত্তি করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: স্ক্রিনশট

সত্তুরোর্ধ্ব বয়সে শৈশবের বন্ধুদের সঙ্গে এক আনন্দমুখর ব্যস্ত দিন কাটালেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা স্মরণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে বাল্যবন্ধুদের শোনালেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা প্রিয় কবিতাও।

ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা ফখরুলের গ্রামের বাড়িতে আজ বুধবার বন্ধুদের নিয়ে ছিল এই আয়োজন। সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় হাওলাদার হিমাগার লিমিটেড প্রাঙ্গণে শৈশবের বন্ধুদের আয়োজনে মিলনমেলায় অংশ নেন বিএনপি মহাসচিব।

আয়োজনের মধ্যমণি হয়ে ওঠেন মির্জা ফখরুল (৭৬)। স্কুলের সহপাঠীদের সঙ্গে স্মরণ করেন শৈশবের অনেক সুখস্মৃতি। স্মৃতিকাতর মির্জা ফখরুল স্মরণ করে শৈশবের অনেক বন্ধুকে যারা এরই মধ্যে দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের বন্ধুদের মধ্যে অনেকেই অসুস্থ। আজ সকালে বন্ধু আনিসুরকে দেখতে গেছিলাম। একেবারেই শয্যাশায়ী, নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছে। জানি না আমরা কে কখন চলে যাব। কিন্তু যাওয়ার আগে অন্তত আজকের দিনটা আমাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’

এ সময় কবিতা আবৃত্তির অনুরোধ আসে। মির্জা ফখরুল অবশ্য বন্ধুদের হতাশ করেননি। তিনি বলেন, ‘একসময় আবৃত্তি করতাম, এখন করি না। বক্তৃতা করি। তারপরও আমি চেষ্টা করব। কারণ, একসময় আমিও নাটক করেছি, রং মেখেছি, একসময় নাট্যগোষ্ঠী করতাম।’ প্রিয় কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’ আবৃত্তি করে শোনান বন্ধুদের।

নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ

—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আজি এ প্রভাতে রবির কর

কেমনে পশিল প্রাণের ‘পর,

কেমনে পশিল গুহার আঁধারে প্রভাতপাখির গান!

না জানি কেন রে এত দিন পরে জাগিয়া উঠিল প্রাণ।

জাগিয়া উঠেছে প্রাণ,

ওরে উথলি উঠেছে বারি,

ওরে প্রাণের বাসনা প্রাণের আবেগ রুধিয়া রাখিতে নারি।

থর থর করি কাঁপিছে ভূধর,

শিলা রাশি রাশি পড়িছে খসে,

ফুলিয়া ফুলিয়া ফেনিল সলিল

গরজি উঠিছে দারুণ রোষে।

হেথায় হোথায় পাগলের প্রায়

ঘুরিয়া ঘুরিয়া মাতিয়া বেড়ায় –

বাহিরেতে চায়, দেখিতে না পায় কোথায় কারার দ্বার।

কেন রে বিধাতা পাষাণ হেন,

চারি দিকে তার বাঁধন কেন!

ভাঙ্ রে হৃদয়, ভাঙ্ রে বাঁধন,

সাধ্ রে আজিকে প্রাণের সাধন,

লহরীর পরে লহরী তুলিয়া

আঘাতের পরে আঘাত কর্।

মাতিয়া যখন উঠেছে পরান

কিসের আঁধার, কিসের পাষাণ!

উথলি যখন উঠেছে বাসনা

জগতে তখন কিসের ডর!

আমি ঢালিব করুণাধারা,

আমি ভাঙিব পাষাণকারা,

আমি জগৎ প্লাবিয়া বেড়াব গাহিয়া

আকুল পাগল-পারা।

কেশ এলাইয়া, ফুল কুড়াইয়া,

রামধনু-আঁকা পাখা উড়াইয়া,

রবির কিরণে হাসি ছড়াইয়া দিব রে পরান ঢালি।

শিখর হইতে শিখরে ছুটিব,

ভূধর হইতে ভূধরে লুটিব,

হেসে খলখল গেয়ে কলকল তালে তালে দিব তালি।

এত কথা আছে, এত গান আছে, এত প্রাণ আছে মোর,

এত সুখ আছে, এত সাধ আছে – প্রাণ হয়ে আছে ভোর।।

কী জানি কী হল আজি, জাগিয়া উঠিল প্রাণ –

দূর হতে শুনি যেন মহাসাগরের গান।

ওরে, চারি দিকে মোর

এ কী কারাগার ঘোর –

ভাঙ্ ভাঙ্ ভাঙ্ কারা, আঘাতে আঘাত কর্।

ওরে আজ কী গান গেয়েছে পাখি,

এসেছে রবির কর।

শোডাউন করে শোকজ খেলেন বিএনপি নেতা শামীম

স্কুলজীবনের সহপাঠীদের সঙ্গে অন্যরকম দিন কাটালেন মির্জা ফখরুল

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজা বাতিল, খালেদা-তারেকসহ সব আসামি খালাস

সেকশন