ক্রীড়া ডেস্ক
করোনাভীতিই হোক কিংবা সচেতনতা—এ নিয়ে শুরু থেকেই ভীষণ কঠোর অবস্থানে অস্ট্রেলিয়া। মহামারী ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রায় ২ বছর সীমান্ত বন্ধ রেখছিল দেশটির সরকার।
করোনা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ানদের কড়াকড়ি খুব কাছ থেকে দেখেছেন সাকিব আল হাসান-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদেরা। গত বছর বাংলাদেশ সফরে অজিদের কাণ্ডকারখানা দেখে অহংবোধ একটু বেশি মনে হচ্ছিল। মিচেল স্টার্ক-মিচেল মার্শরা ঢাকায় নেমে সাংবাদমাধ্যম এড়িয়ে সরাসরি চলে যান হোটেলে। পুরো হোটেলই তাঁদের জন্য বরাদ্দ দিতে হয়েছিল। গড়ে তুলেছিল কঠোর জৈব সুরক্ষা বলয়। মাঠেও অজিদের আচরণ ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। ম্যাচ শেষে একবারও বাংলাদেশের দলের সঙ্গে করমর্দন করেনি সফরকারীরা।
অথচ সেই অস্ট্রেলিয়ারই এক ক্রিকেটার করোনায় আক্রান্ত হয়েও অংশ নিয়েছেন কমনওয়েলথ গেমসের ফাইনালে। ভারতকে হারিয়ে হয়েছেন সোনার পদকের অংশীদারও। তিনি তাহলিয়া ম্যাকগ্রা। ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে করোনা পজিটিভ হওয়ার পরও খেলার অনুমতি পেয়েছেন ২৬ বছর বয়সী অলরাউন্ডার।
অস্ট্রেলিয়ান কমনওয়েলথ গেমসের দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই তাহলিয়াকে খেলিয়েছে তারা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘রোববার (গতকাল) মৃদু উপসর্গ দেখা দিলে তাহলিয়ার পরীক্ষা করা হয়, যেখানে করোনা ধরা পড়ে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার চিকিৎসক দল এ বিষয়ে কিছু প্রটোকল দিয়েছে। তাহলিয়ার এমন উপসর্গে অন্যদের মধ্যে ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা কম ছিল। সে কারণে আইসিসিও তাঁকে খেলার অনুমতি দিয়েছে।’
ফাইনাল শুরুর আগে জাতীয় সঙ্গীতের সময় সতীর্থের সঙ্গে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়াননি তাহলিয়া। মুখে মাস্ক পরে একাই গ্যালারিতে বসে থাকেন। পরে বাকিরা ডাগআউটে বসলেও তিনি সেই গ্যালারিতেই বসে থাকেন।
অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের ১১ তম ওভারে অধিনায়ক মেগ ল্যানিং রানআউট হলে উইকেটে আসেন তাহলিয়া। ব্যাটিংয়ের সময় অবশ্য তাঁর মুখে মাস্ক ছিল না। অবশ্য ২ রানের বেশি করতে পারেনি। বোলিংয়েও ছিলেন নির্বিষ। ২৪ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য।
তাতে কী বা আসে-যায় তাহলিয়ার? দেশের হয়ে সোনা জিতেছেন। করোনা পজিটিভ হয়েও খেলতে নেমে অন্য রকম প্রথমের রেকর্ডটাও গড়েছেন।