ভাগ্যের ছোঁয়া না পেলে পাঁচ বছর আগেই গর্ডন গ্রিনিজ-কার্ল হুপারকে নিদারুণ এক আক্ষেপে পুড়তে হতো। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের টিকিট পাওয়ার দৌড়ে বাছাইপর্বে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে বৃষ্টি আইনে ৫ রানের জয় পেয়েছিল ক্যারিবিয়ানরা। না হলে সেবারই দুই কিংবদন্তিকে বলতে হতো, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ ছাড়া বিশ্বকাপ হবে, বিশ্বাসই করতে পারছি না।’
কানের পাশ দিয়ে যাওয়া সেদিনের গুলিটা এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বুকেই আঘাত হেনেছে। ‘ঘাতকে’র নাম স্কটল্যান্ড। ২০১৯ বিশ্বকাপে যাদের খেলার স্বপ্ন জলে মিশিয়ে দিয়েছিল, সেই স্কটিশরাই এবার তাদের ‘দর্শক’ বানিয়ে দিল। অবশ্য গ্রুপ পর্বেই টানা দুই হারে বিশ্বকাপে খেলার কাজটা আগেই কঠিন করে ফেলেছিল ক্যারিবিয়ানরা। শেষ দুই ম্যাচে হেরে বসে জিম্বাবুয়ে ও নেদারল্যান্ডসের কাছে। বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলতে হলে সুপার সিক্সের তিনটি ম্যাচই জিততে হতো তাদের। সঙ্গে প্রার্থনায় বসতে হতো শীর্ষে থাকা অন্য দলগুলোর পয়েন্ট হারানোর। কিন্তু সুপার সিক্সের প্রথম ম্যাচে হেরে নিজেদের কাজই ঠিকঠাক মতো করতে পারেনি তারা।
ক্লাইভ লয়েড, স্যার গ্যারি সোর্বাস, ভিভ রিচার্ডস, অ্যান্ডি রবার্টস, জোয়েল গার্নার, কার্টলি আমব্রোস, ব্রায়ান লারা, শিবনারায়ণ চন্দরপলদের মতো কিংবদন্তিদের পরাক্রমশালী দল এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই নিচের সারির দলে পরিণত হয়েছে। নিজেদের পতনের শেষ স্তরে তারা। ক্যারিবিয়ানদের পতনের শুরু অনেক আগে থেকে। নিজেদের মাঠে ২০০৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলার পর থেকেই তাদের পারফরম্যান্স ক্রমেই নিম্নমুখী। টি-টোয়েন্টি বাদে অন্য দুই সংস্করণে তাদের খেলার মান শুধুই পড়েছে। সেটা দ্বিপক্ষীয় কিংবা আইসিসির যেকোনো টুর্নামেন্টেই হোক না কেন; ক্যালিপসো সুর আর শোনা যায় না ঠিকঠাক।
অনেক আগে থেকেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলায় পচন ধরেছে বলেই এখন কষ্ট পান না জানিয়েছেন কিংবদন্তি গ্রিনিজ। বাংলাদেশের এ সাবেক কোচ বলেছেন, ‘আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হার আমাকে কষ্ট দিত। কিন্তু এখন আর সেভাবে এটি আমাকে পোড়ায় না। এর মূল কারণ, অনেক দিন ধরেই আমাদের ক্রিকেটের মান নিচে নেমেছে।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ–জিম্বাবুয়েকে ধাক্কা দেওয়ার পুরস্কার হিসেবে স্কটল্যান্ডের বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা বেড়ে গেছে। সর্বশেষ কয়েক বছর ধরে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভালো ছন্দেও রয়েছে স্কটিশরা। ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যেমন দুবারের চ্যাম্পিয়ন ইন্ডিজকে হারিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল তারা। আগামীকাল নেদারল্যান্ডসকে হারাতে পারলেই পাবে বিশ্বকাপের টিকিট। তবে কাজটা মোটেও সহজ হবে না। ডাচদেরও সাম্প্রতিক সময়ের পারফরম্যান্স মন্দ নয়। সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তারাও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছে। অবশ্য হারলেও সুযোগ থাকতে পারে। তখন প্রতিপক্ষের কাছে কম ব্যবধানে হারতে হবে। নেদারল্যান্ডস জিতলে ২ দলের পয়েন্ট হবে ৬। নেট রানরেটে যারা এগিয়ে থাকবে, তারাই শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ২০২৩ বিশ্বকাপের টিকিট পাবে।