২০২৩ বিশ্বকাপে একের পর এক চমক দেখিয়েছে আফগানিস্তান ও নেদারল্যান্ডস। ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা তিন বিশ্বচ্যাম্পিয়নকে হারিয়েছে আফগানরা। অন্যদিকে নেদারল্যান্ডস হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশকে। তাতে আফগান, ডাচ-দুই দলেরই সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে। লক্ষ্ণৌর শ্রী অটল বিহারি বাজপেয়ি স্টেডিয়ামে আজ আফগানদের বোলিংয়ের সামনে ২০০ এর আগেই অলআউট হয়েছে নেদারল্যান্ডস।
টস জিতে আজ ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নেদারল্যান্ডস অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস। বিক্রমজিৎ সিং না খেলায় ওপেনিং করেছেন ওয়েসলি বারেসি। তবে ওপেনিংয়ে সুযোগ পেলেও দ্রুত আউট হয়ে গেছেন বারেসি। ইনিংসের পঞ্চম বলে মুজিব উর রহমানের ঘূর্ণিতে এলবিডব্লুর শিকার হওয়া বারেসি করেছেন ৪ বলে ১ রান। ডাচদের স্কোর হয়ে যায় ০.৫ ওভারে ৩ রানে ১ উইকেট। এরপর ডাচদের ইনিংসের হাল ধরেছেন ম্যাক্স ও’ডাউড এবং কলিন অ্যাকারমান। ও’ডাউড-অ্যাকারমান বেশ সাবলীলভাবে খেলতে থাকেন আফগান বোলারদের। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে এই দুই ব্যাটার যোগ করেছেন ৬৩ বলে ৬৯ রান। এই জুটি আফগানিস্তান ভেঙেছে দুর্দান্ত এক ফিল্ডিংয়ে। ১২ তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মোহাম্মদ নবীকে ফাইন লেগ দিয়ে সুইপ করেছেন ও’ডাউড। দুই রান নেওয়ার আগেই ডিপ ফাইন লেগ থেকে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের দুর্দান্ত থ্রোতে ভেঙে যায় স্ট্রাইক প্রান্তের স্টাম্প। ৪০ বলে ৯ চারে ৪২ রান করেছেন ও’ডাউড।
এই জুটি ভাঙার পর রানের চাকাও ধীর হতে থাকে নেদারল্যান্ডসের। ও’ডাউডের মতো অ্যাকারমানও আউট হয়েছেন রান আউটের ফাঁদে কাটা পড়ে। ৩৫ বলে ৪ চারে ২৯ রান করেছেন অ্যাকারমান। ও’ডাউড-অ্যাকারমানের পর ডাচ অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডসও হয়েছেন রান আউট। তিন ব্যাটার রান আউট হয়ে দ্রুত বিদায় নিলে ডাচদের স্কোর দাঁড়ায় ১৮.৪ ওভারে ৪ উইকেটে ৯২ রান। এরপর নবী ও নুর আহমাদের ঘূর্ণি জাদুতে পরাস্ত হয়ে চোখে সর্ষেফুল দেখতে থাকেন নেদারল্যান্ডস ব্যাটাররা। ৪ উইকেটে ৯২ থেকে ৩১ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩৪ রান হয়ে যায় ডাচরা। যেখানে বাস ডি লিড, লোগান ফন বিকের উইকেট দুটি নিয়েছেন নবী। আর সাকিব জুলফিকারকে ফিরিয়েছেন নুর।
সতীর্থদের নিয়মিত আসা-যাওয়ার মাঝে একপ্রান্তে আগলে খেলতে থাকেন সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট। ৭৪ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি পেয়েছেন এঙ্গেলব্রেখট। এই ফিফটি পেয়েছেন ৩২ তম ওভারের দ্বিতীয় বলে নুরকে শর্ট ফাইন লেগ দিয়ে চার মেরে। তবে ফিফটির পর ইনিংস বড় করতে পারেননি এঙ্গেলব্রেখট। ৫৮ রান করা এই ব্যাটারও রান আউটের ফাঁদে কাটা পড়ে আউট হয়েছেন। ৮৬ বলের ইনিংসে মেরেছেন ৮টি চার। তাতে নেদারল্যান্ডসের স্কোর দাঁড়ায় ৩৪.৪ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫২ রান।
এঙ্গেলব্রেখটের বিদায়ের পর একমাত্র স্বীকৃত ব্যাটার হিসেবে উইকেটে ছিলেন রোয়েলফ ফন ডার মারউই। এরই মধ্যে ৩৬ তম ওভারের চতুর্থ বলে ফন ডার মারউইকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন রশিদ খান। তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যায় ডাচ এই লোয়ার অর্ডার ব্যাটার। যেখানে দেখা যায়, বল লেগ স্টাম্প মিস করেছে। এরপর আরিয়ান দত্তর বিপক্ষে মুজিব এলবিডব্লুর আবেদন করলেও আম্পায়ার তাতে সাড়া দেননি। রিভিউ না থাকায় আফগানিস্তান উইকেটও নিতে পারেনি। নবম উইকেট জুটিতে দত্তকে নিয়ে ফন ডার মারউই ৩৯ বলে ১৭ রানের জুটি গড়তে অবদান রেখেছেন। ৪২ তম ওভারের প্রথম বলে ফন ডার মারউইকে ফিরিয়ে জুটি ভেঙেছেন নুর।
৯ উইকেট পড়ার পর নেদারল্যান্ডস চেষ্টা করছিল পুরো ৫০ ওভার ব্যাটিং করে স্কোরটা যতটুকু বাড়ানো যায়। তবে তা আর সম্ভব হয়নি। ৪৭ তম ওভারের তৃতীয় বলে পল ফন মিকিরেনকে এলবিডব্লু করে নেদারল্যান্ডসের ইনিংসের সমাপ্তি ঘটিয়েছেন নবী। ৪৬.৩ ওভারে ১৭৯ রানে অলআউট হয়েছে ডাচরা। ইনিংস সর্বোচ্চ ৫৮ রান এসেছে এঙ্গেলব্রেখটের ব্যাট থেকে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪২ রান করেছেন ও’ডাউড। আফগান বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন নবী। নুর ও মুজিব নিয়েছেন ২টি ও ১টি উইকেট। চারটি উইকেট হয়েছে রান আউট।