বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে আজ খেলা চলাকালীন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তামিম ইকবাল। হেলিকপ্টারে নেওয়ার অবস্থায় ছিলেন না বলে বিকেএসপির কাছাকাছি কেপিজে হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করানো হয়। বাংলাদেশের এই তারকা ক্রিকেটারকে রাখা হয়েছে ৪৮ ঘণ্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণে।
কেপিজে হাসপাতালের মেডিকেল ডিরেক্টর ড. রাজীব হাসান আজ দুপুরে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন। রাজীব বলেছেন, ‘যখন তাঁকে (তামিম) নিয়ে আসা হয়, তখন চিকিৎসা শুরু হয়। পরে আমরা চিন্তা করি, ঢাকায় নিয়ে যাওয়া যাবে কি না। বিভিন্ন কারণে আসলে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া যায়নি। পরে তাঁর অবস্থা আসলে জটিল হয়ে যায়। জটিল অবস্থাতেই তিনি আসেন এবং জটিল অবস্থায় যত চিকিৎসা প্রয়োজন, সবই করা হয়েছে। আল্লাহর রহমতে পরিস্থিতি অনুকূলে আছে। তাঁর হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। সে জন্য এনজিওগ্রাম, অ্যানজিওপ্লাস্টি ও স্টেন্ট করা হয়েছে। ড. মারুফ তাঁর (তামিম) এই স্টেন্টিং দক্ষতার সঙ্গে করেছেন। এই ব্লকটা পুরোপুরি চলে গেছে।’
ব্লক দূর হলেও তামিমের জটিল অবস্থা এখনো কাটেনি বলে জানিয়েছেন রাজীব। কেপিজে হাসপাতালের মেডিকেল ডিরেক্টর বলেন, ‘স্টেন্টিংয়ের পরও তিনি পর্যবেক্ষণে আছেন। জটিল অবস্থা এখনো কাটেনি। আমরা তাঁর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছি। তিনি (তামিম) ভালো হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন বলে আশা করছি। সবাই দোয়া করবেন।’ সাভারের জিরানীতে অবস্থিত কেপিজে হাসপাতালের প্রধান মোহাম্মদ তৈফিক বিন ইসমাঈলসহ অন্যরাও উপস্থিত ছিলেন। তামিমের হার্টে রিং পরানো হয়েছে। বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটারকে দেখতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদ, বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিমও এসেছেন।
তামিমের অসুস্থতা নিয়ে তাঁর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে একটি পোস্ট দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘সকালে টসের পর হালকা বুকে ব্যথা অনুভব করলে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড় বিষয়টি দ্রুত দলের ফিজিও ও ট্রেইনারকে জানান। প্রাথমিকভাবে গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যা মনে হওয়ায় তিনি গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ গ্রহণ করেন। তবে কিছুক্ষণ পরও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সতর্কতার অংশ হিসেবে নিকটতম হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং চিকিৎসা শেষে তিনি বিকেএসপিতে ফিরে আসেন।’
বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টায় বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে শুরু হয়েছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব। মোহামেডান অধিনায়ক টসের পর তামিমের অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ার পর কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেটার বিস্তারিত জানানো হয়েছে তামিমের পেজে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবা হয়। দলের (মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব) ম্যানেজার শিপন ভাইয়ের সঙ্গে আলোচনা করে হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করা হয়, যাতে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা সম্ভব হয়।
তবে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়লে তাঁকে আবার নিকটতম কেপিজে হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজে নেওয়া হয়। সেখানে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁর হার্টে ব্লক ধরা পড়ে। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী দ্রুত এনজিওগ্রাম করা হয় এবং রিং পরানো হয়।
বর্তমানে তিনি কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তাঁর সুস্থতার জন্য সবার দোয়া কামনা করা হচ্ছে, যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।’
আরও খবর পড়ুন: