ভারতীয় ক্রিকেট দলের পাইপলাইন যে কতটা শক্তিশালী, বাংলাদেশ সিরিজ দিয়ে আবার সেটা প্রমাণিত হলো। টেস্ট সিরিজে থাকা একঝাঁক ক্রিকেটারকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) রাখেইনি টি-টোয়েন্টি দলে। গোয়ালিয়রে আগামীকাল শুরু হতে যাওয়া বাংলাদেশ-ভারত টি-টোয়েন্টি সিরিজে দেখা যেতে পারে চমক।
২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকেই ভারতে দেখা যাচ্ছে একের পর এক পরিবর্তন। বিশেষ করে এই টি-টোয়েন্টি সংস্করণে। বিশ্বকাপে যে দুই তারকা বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা ওপেন করেছেন, তাঁরা বিশ্বকাপ শেষেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরে গেছেন। পরবর্তীতে জিম্বাবুয়ে সফরে ওপেনিং করেন শুবমান গিল ও যশস্বী জয়সওয়াল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে অধিনায়কও ছিলেন গিল। এবার সেই গিল-জয়সওয়াল দুজনকেই বাংলাদেশের বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত টেস্ট সিরিজের পর বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভারত যে ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে, সেখানে স্বীকৃত ওপেনার অভিষেক শর্মা। অভিষেকের সঙ্গে ওপেনিংয়ে দেখা যেতে পারে সঞ্জু স্যামসনকে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের আজ সকালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তেমনটাই জানা গেছে। তবে স্যামসন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যে খুব একটা নিয়মিত নন, সেটা তাঁর ম্যাচের সংখ্যা দেখলেই বোঝা যাবে। ২০১৫ সালে অভিষেকের পর ভারতের জার্সিতে খেলেছেন ৩০ টি-টোয়েন্টি। এর মধ্যে ওপেনিং করেছেন পাঁচ ম্যাচে। যদিও পাওয়ার প্লের সুবিধাটা (প্রথম ৬ ওভার) তিনি ভালোই কাজে লাগাতে পারেন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যে পাঁচ ম্যাচে ওপেন করেছেন, সেখানে তাঁর স্ট্রাইকরেট ১৬১.৫৩।
স্যামসনকে নিলে ‘এক ঢিলে দুই পাখি’ মারতে পারবে ভারত। কারণ তিনি যে উইকেটরক্ষক ব্যাটার। উপরন্তু ঋষভ পন্তকেও তো নেওয়া হয়নি বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে। সেক্ষেত্রে জিতেশ শর্মা বাংলাদেশের বিপক্ষে একাদশে না-ও সুযোগ পেতে পারেন। তিনে খেলবেন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। চার-পাঁচ-ছয়ে খেলতে পারেন হার্দিক পান্ডিয়া, রিয়ান পরাগ ও রিংকু সিং, যেখানে আইপিএলে চারে ব্যাটিং করে সফল হয়েছেন পান্ডিয়া। পরাগ দলের প্রয়োজনে হালও ধরতে পারেন। থিতু হয়ে বড় শট খেলতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। পাশাপাশি তাঁর খণ্ডকালীন স্পিন বোলিংও দারুণ কার্যকর।
রিংকু তো ডেথ ওভারে ঝড় তোলায় ওস্তাদ। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে গত বছরের আগস্টে অভিষেকের পর তাঁর গড় ও স্ট্রাইকরেট ৫৯. ৭১ ও ১৭৪. ১৬। ২৩ ম্যাচ খেলেই রিংকু ছাড়িয়ে গেলেন কোহলিকে। ভারতের জার্সিতে টি-টোয়েন্টিতে ৪৮.৬৯ গড় নিয়ে দুইয়ে আছেন কোহলি।
পান্ডিয়ার মতো পেস বোলিং অলরাউন্ডার থাকলে হয়তো শিবম দুবের বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের একাদশে জায়গা না-ও মিলতে পারে। যদিও ২০২৪ আইপিএল, পরবর্তীতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুবে দেখিয়েছেন ব্যাটিংয়ে ঝড় তুলতে তিনি কম যান না। মায়াঙ্ক যাদবের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হতে পারে বাংলাদেশ সিরিজ দিয়েই। ২০২৪ আইপিএলে গতির ঝড়ে কাঁপিয়েছিলেন এই পেসার।
শ্রীলঙ্কা সিরিজ থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক হয়েছেন সূর্যকুমার। অফিশিয়াল অধিনায়কত্বের শুরুটা ভারত এ বছরের জুলাইয়ে করেছিল লঙ্কানদের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ধবলধোলাই করে। ভারত-শ্রীলঙ্কা তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটা হয়েছে লঙ্কাতেই।